রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কেড়ে নিয়েছে ৪৬টি তাজা প্রাণ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বলছে, ওই ভবনে রেস্তোরাঁ করার অনুমোদন ছিল না।
শুক্রবার রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) প্রকল্পের পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভবনটির এক থেকে সাততলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। তবে তা শুধু অফিসকক্ষ হিসেবে ব্যবহারের জন্য। রেস্তোরাঁ, শোরুম (বিক্রয়কেন্দ্র) বা অন্য কিছু করার জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ওই ভবনে সব মিলিতে আটটি রেস্তোরাঁ, একটি জুস বার (ফলের রস বিক্রির দোকান) ও একটি চা-কফি বিক্রির দোকান ছিল। এছাড়াও ছিল মুঠোফোন ও ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম এবং পোশাক বিক্রির দোকান। এর মধ্যে ভবনের নিচতলায় দুটি ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম বিক্রির দোকান ও একটি জুসবার (ফলের রস বিক্রির দোকান) ছিল।
দ্বিতীয় তলায় কাচ্চি ভাই নামের একটি রেস্তোরাঁ, তৃতীয় তলায় ইলিয়ন নামের একটি পোশাকের ব্র্যান্ডের দোকান, চতুর্থ তলায় খানাস ও ফুকো নামের দুটি রেস্তোরাঁ, পঞ্চম তলায় পিৎজা ইন নামের একটি রেস্তোরাঁ, ষষ্ঠ তলায় জেস্টি ও স্ট্রিট ওভেন নামের দুটি রেস্তোরাঁ এবং ছাদের একাংশে অ্যামব্রোসিয়া নামের একটি রেস্তোরাঁ ছিল।
শুক্রবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেন, বেইলি রোডের ভবনটিতে কোনো অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে ভবন কর্তৃপক্ষকে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ভবনে অনেকগুলো গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় সেগুলো বিস্ফোরিত হয়ে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের ২ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে পুলিশ, আনসার, র্যাব ও এনএসআই।
এই অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও অনেকে।