ঝালকাঠি প্রতিনিধি: দেশের নানা প্রান্তে যখন বিশ্ব দুগ্ধ দিবসে শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুষ্টিকর দুধ, তখন ঝালকাঠিতে দিবসটি যেন হারিয়ে যায় প্রশাসনিক ফাইলের ভাঁজে। হয়নি কোনো র্যালি, বিতরণ করা হয়নি এক ফোঁটা দুধও। অথচ বরাদ্দ ছিল—দুই লাখ আট হাজার টাকা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালনে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এর বদলে উঠেছে অনিয়ম, গাফিলতি ও দুর্নীতির অভিযোগ।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান স্বীকার করেছেন, এ বছর দিবসটি পালন করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘বেশ ক’দিন ধরে বৃষ্টি, সামনে ঈদ, র্যালির টি–শার্ট এখনো তৈরি হয়নি। তাই কর্মসূচি করা যায়নি।’
তবে বরাদ্দের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে পাওয়া ২ লাখ ৮ হাজার টাকা এখনো আমার কাছে গচ্ছিত আছে। পরে এই টাকা দিয়ে দিবস পালন করব।’
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—যে অর্থ নির্ধারিত ছিল ১ জুনের কর্মসূচির জন্য, তা ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেওয়া কতটা যৌক্তিক?
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ঘুরে ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু দুগ্ধ দিবস নয়, দপ্তরের অন্যান্য কার্যক্রমেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। সরকারি অনুদান, খামার উন্নয়ন প্রকল্প, এমনকি ভেটেরিনারি সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও ঘুষ ও পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছেন অনেক খামারি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খামারি বলেন, ‘টাকা না দিলে কোনো কাজ হয় না। সেবা নিতে এলেই হয়রানি শুরু হয়।’
আরেক খামারি বলেন, ‘সরকার তো আমাদের উন্নয়নের জন্যই এসব প্রকল্প দেয়। কিন্তু এখানে এসে দেখি উল্টোভাবে চলছে সব কিছু।’
স্থানীয় কয়েকজন খামারি ও সচেতন নাগরিক বলছেন, এমন অনিয়ম চলতে থাকলে জেলার প্রাণিসম্পদ খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর প্রভাব পড়বে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও।
তাঁদের মতে, এখনই এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। না হলে সরকারের ভালো উদ্যোগগুলো মাঠপর্যায়ে পৌঁছাবে না।
সাজ্জাত বিশ্বাস