আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার রঙিন স্বপ্ন কর্পূরের মতো উবে যাবে।বিএনপি গত ১৩ বছরে ১৩ মিনিটও আন্দোলন করেনি।
সোমবার(৩১ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাসদ প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এমনটা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন ফখরুল সাহেব আন্দোলন করতে চান। এই আন্দোলনের নাটাই কোথায় আমরা জানি। ১০ ডিসেম্বর সরকার পতন করে ক্ষমতায় যাবেন, এই স্বপ্ন, রঙিন খোয়াব, কর্পূরের মতো উবে যাবে। সাম্প্রদায়িক শক্তির সবচেয়ে বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। বাংলাদেশের নালিশ পার্টি। এই পার্টি জঙ্গিবাদের প্রধান ঠিকানা। মির্জা ফখরুল তার প্রতিনিধিত্ব করছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন,
ফখরুল বলছেন- আমি শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ করেছি। আমরা খবর পেয়েছি দুবাই থেকে কোটি টাকা আসছে। টাকার বস্তার ওপর তিনি বসে আছেন। এটা কেন ব্যক্তিগত? আমি তাকে আক্রমণ করলাম? তিনি তো একটা দলের প্রতিনিধি। আমরা রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় বসাতে হবে। মির্জা ফখরুল আপনাকে বলতে চাই, আমরা চৌদ্দদল ঐক্যবদ্ধ। এই মঞ্চ থেকে আমি আহ্বান জানাব, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে এ দেশের মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে এ দেশের ক্ষমতার মঞ্চে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় বসাতে হবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আমার মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে ওরা কারা হুমকি দিচ্ছে? মুক্তিযুদ্ধের সব শক্তিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, এ দেশে আমাদের কেউ হারাতে পারবে না। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমরাই বিজয়ের বন্দরে পৌঁছে যাব।
শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতিনিধি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা হেরে গেলে বাংলাদেশ হেরে যাবে। শেখ হাসিনা হারতে পারে না। আমরা পরাজয় মানি না। স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে আমরা পরাজিত হব! কেন বেঁচে আছি? কাজেই এই চৌদ্দদলীয় জোটকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। আমরা আছি। শেখ হাসিনা আপনাদের সঙ্গে আছেন। তিনি থাকবেন।
চৌদ্দদল, ইনু ভাই আপনারা ঠিক থাকুন জানিয়ে তিনি বলেন, ভুল-ত্রুটি রাজনীতিতে আপনাদেরও আছে। বাংলার মানুষের ভাগ্য নিয়ে যারা রাজনীতি করে, তারা আবারও ক্ষমতায় আসবে?
বিএনপি মহাসচিবের এক বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব দূরবীক্ষণ যন্ত্র নিয়ে দেখে নাকি বলছেন, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নাকি ২২ হাজার চেয়ার ছিল। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, ৭০ হাজার চেয়ার সেখানে ছিল। মিথ্যা কথা বলবেন না। নিজেরা কয়েকটা সমাবেশ করে লাফালাফি শুরু করেছেন। এখন মুখ কালো কেন? মোকাবিলার ভয়ে মুখ কালো। মির্জা ফখরুলের দিকে তাকানো যায় না। রংপুর থেকে ঢাকার খবর পেয়ে তার মনটা বড়ই খারাপ।
বিএনপির সমাবেশ নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় আপনাদের ১০ লাখ লোক টার্গেট? আগামী ৪ তারিখ চট্টগ্রামে ১০ লাখ লোক দেখে আসবেন। সেদিন চট্টগ্রাম জনতার মহাসমুদ্র হয়ে যাবে। সেদিন চট্টগ্রামে আপনাকে দাওয়াত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নিজের দলের নেত্রীর জন্য দেখার মতো একটা মিছিল করতে পারেননি বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, লজ্জা লাগে না? যা করেছে শেখ হাসিনা করেছে। আপনারা কী করেছেন? এই কথা খালেদা জিয়ার মনে কি জাগে না? জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃবৃন্দকে বলতে চাই, কোন মুখে আপনারা খালেদা জিয়ার মুক্তি চান? কী করেছেন তার মুক্তির জন্য? নেতা বানাবেন কাকে? হাওয়া ভবনের যুবরাজকে? আর রাজনীতি করবে না বলে প্রকাশ্যে মুচলেকা দিয়ে যে বিদেশ গিয়েছে। বিদেশে যে পালিয়েছে, বাংলার মানুষ তাকে মেনে নেবে না। এই নাম শুনলেই লোকে ভয় পায়। আতঙ্কে শিউরে উঠে।
বিএনপি মহাসচিবকে লক্ষ্য করে কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন- ব্যক্তিগত আক্রমণ করলে সামাল দিতে পারবেন না। ফখরুল সাহেব রাজনৈতিক কথাই বলেছি। আপনাদের দেশনেত্রীকে কেন এখনো ঘোরের মধ্যে রেখেছেন? এবারও আপনারা দোয়া মাহফিল করে তার জন্মদিবস পালন করেছেন। একটা মানুষের ৬টা জন্মদিবস কী করে হয়? বেগম জিয়াকে আর কত তেল দেবেন? ১৫ আগস্টে যতদিন আপনারা এই দিবস পালন করবেন ততদিন আপনারা পিছিয়ে পড়বেন। আপনার কাছ থেকে শিষ্টাচার শিখতে হবে না আপনাদের কী শিষ্টাচার সেটি দেখেছি।
‘সন্তান মারা গেছে। শোকাতর মাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। যাকে আপনারা হত্যা করতে চেয়েছিলেন। ঘরের বাইরের সব গেট বন্ধ। এই শিষ্টাচারও আপনারা দেখিয়েছেন। আপনারা আমাদের শিষ্টাচার শেখাবেন? আপনাদের শিষ্টাচার ২১ আগস্ট, ১৫ আগস্ট আর ১৩ নভেম্বর। সেই ইতিহাস কি ভুলে গেছেন?’, যোগ করেন তিনি।
বিএনপির রিজার্ভ ৪ বিলিয়নও ছিল না উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা এখন বলে আমরা রিজার্ভ খেয়ে ফেলেছি। আমাদের ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছিল। এই বৈশ্বিক সংকটে ৩৬ বিলিয়ন ডলার। আপনাদের চেয়ে কতগুণ বেশি বলেও প্রশ্ন তুলেন ওবায়দুল কাদের৷
