সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের উপর হামলার ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিচারপতির কাছে গিয়েছিলেন আমাদের আইনজীবীরা। তিনি বলেছেন ‘আমার যদি কিছু করার থাকে তাহলে আমি করবো।’ তিনি যদি এ কথা বলেন, তাহলে কোথায় যাবো আমরা? কার কাছে যাবো আমরা? এ দেশের মানুষ কোথায় যাবে?
আজ শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে ডিআরইউতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সম্প্রতি বিএনপি আন্দোলনে প্রাণ হারানো শহীদদের স্মরণে অর্পণ বাংলাদেশ কতৃক আয়োজিত এক স্বরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছর ধরে এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে আমরা আসি। কষ্ট পাই, পরিবারগুলো কষ্ট পায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা তাদের জন্য খুব বেশি কিছু করতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমাদের চলমান আন্দোলন তো করার কথা না। আমরা আন্দোলন করেছি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। যারা আমাদের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছিল, গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছিল। একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করছিল না। যে কারণে একটা যুদ্ধ হয়েছে। সেই যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করেছি। একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। আমাদের দুর্ভাগ্য- সেই গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য আবারো লড়াই করতে হচ্ছে, প্রাণ দিতে হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশ যে এই পরিস্থিতিতে পড়বে, তা আমরা কখনো ভাবিনি। কেউ ভাবেনি। মাঝে মাঝে মনে হয়! এ কেমন দেশ আমরা তৈরি করলাম? যে দেশে মানুষের সম্মান থাকবে না, যে দেশের মানুষের প্রাণের কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না। বেঁচে থাকবার কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না, আমি আমার ভোট দিতে পারবো না, সেখানে আমি আমার কথা বলতে পারব না, আমার প্রতি অন্যায় হবে সে কথা বলতে পারব না, আইনজীবীরা কোর্টে পুলিশের হাতে পিটানি খাবেন। সেই দেশটা আমরা চিন্তা করিনি, কোনো দিন ভাবিওনি।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে শহীদদের পরিবারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনেকে স্বামী হারিয়েছে, বাবা হারিয়েছে, ছেলে হারিয়েছে, ভাই হারিয়েছে। মানব সভ্যতার ইতিহাস বলে আত্মত্যাগ কোনো দিন বৃথা যাবে না। তাদের রক্তের স্রোত, মায়ের অশ্রু ধারা কখনো বৃথা যেতে পারে না। লড়াই শুরু করেছি, অধিকার ফিরে পাবার জন্য। আমাদের লড়াই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। একটা আধুনিক, কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা লড়াই করছি। মানুষের অধিকার পাওয়ার জন্য লড়াই শুরু করেছে, ন্যায় বিচারের জন্য। এই লড়াইয়ে আমরা অনেক দূরে এগিয়েছি। প্রতিদিন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের সমস্ত মানুষকে সাথে নিয়ে অতি শিগগিরই এই লড়াইয়ে জয়ী হবো।
অর্পণ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বিথীকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।