বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য মতে, ২০২৪ সাল শেষে দেশে মোট বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ২০ হাজারে । রোববার (১৮ মে) বিবিএসের প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৪ এর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে বেকার জনগোষ্ঠী ছিল ২৫ লাখ ৫০ হাজার। সব মিলিয়ে এক বছরের ব্যবধানেও দেশে বেকার বেড়েছে। ২০২৪ সালে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২৩ সালে ছিল ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নিয়ম অনুসারে, বেকার মূলত তারাই, যারা সাত দিনের মধ্যে মজুরির বিনিময়ে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ পাননি এবং এক মাস ধরে কাজ খুঁজেছেন, কিন্তু মজুরির বিনিময়ে কোনো কাজ পাননি। বিবিএস এই নিয়ম অনুসারেই বেকারের হিসাব দিয়ে থাকে।
এর আগে ২০২৩ সালে দেশে মোট বেকার ছিল ২৪ লাখ ৬০ হাজার। সেই হিসেবে এক বছরে দেশে বেকার বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার।
বিবিএসের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, দেশে পুরুষ বেকারের সংখ্যা ১৮ লাখ, অন্যদিকে নারী ৮ লাখ ২০ হাজার। দেশে বেকারের হার বেড়ে ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ হয়েছে, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। দেশে পুরুষ বেকারের হার ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং নারী বেকারের হার ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
এদিকে দেশে কর্মে নিয়োজিত বা শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফলে বেড়েছে বেকার মানুষের সংখ্যা। বছরের শুরুতে বেকার মানুষের সংখ্যা কম থাকলেও বছর শেষে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এতে বছরের ব্যবধানে দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। এই সময়ে কৃষি, সেবা এবং শিল্প, সব খাতেই কমেছে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী। নারীর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে পুরুষ বেকারের সংখ্যা বেড়েছে বেশি।
কমেছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা: ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দেশে বর্তমানে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে ৭কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ২০২৩ সালে যা ছিল ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। ফলে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমেছে ১৭ লাখ ২০ হাজার জন। পুরুষ ও নারী শ্রমশক্তি কমেছে। দেশে সব থেকে বেশি মানুষ কাজ করে কৃষি খাতে। এরপরেই রয়েছে সেবা ও শিল্প খাত। দেশে যুবশ্রম শক্তি ২ কোটি ২৬ লাখ, ২০২৩ সালে যা ছিল ২ কোটি ৬৭ লাখ। ফলে এক বছরে দেশে যুব শ্রম শক্তিও কমেছে।
বিবিএস জানায়, শ্রমশক্তি জরিপে ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সি পুরুষ-নারী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে শ্রমবাজারের সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রাক্কলন করা হয়। দেশব্যাপী ১ হাজার ২৮৪টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে সর্বমোট ৩০ হাজার ৮১৬টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।