আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত গোপালগঞ্জে জুলাই পদযাত্রা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। তাদের এই কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলা ও ভাঙচুরও চালিয়েছে। এজন্য গোপালগঞ্জকে ‘মুজিববাদ’ মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে এনসিপি। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, যেকোনো মূল্যে তারা গোপালগঞ্জকে ‘মুজিববাদ’ মুক্ত করে ছাড়বেন।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্কে আয়োজিত সমাবেশে নাহিদ ইসলাম এই কথা বলেন।
এনসিপির সমাবেশে যোগ দেওয়া জনতাকে সাহসী সন্তান আখ্যায়িত করে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আপনারা যারা আজ এখানে উপস্থিত হয়েছেন আপনারা সাহসী সন্তান। আমরা জানি, যদি বাধা দেওয়া না হতো, ভয় তৈরি করা না হতো, লোকে লোকারণ্য হতো এই সমাবেশ।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা গোপালগঞ্জে এসেছিলাম জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে। এখানে কোনো যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে আসিনি। আমরা গোপালগঞ্জের নাম পাল্টাতে আসিনি। আমরা এসেছি গোপালগঞ্জের মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, মুজিববাদীরা আজ আমাদের বাধা দিয়েছে। আমরা গত জুলাই আন্দোলনে বলেছিলাম, বাধা দিলে বাঁধবে লড়াই। সেই লড়াইয়ে আমরা টিকেছিলাম। আজ বাধা দেওয়া হয়েছে। দ্বিগুণ গতিতে আমরা জবাব দেব।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আপনারা যারা নতুন বাংলাদেশের পক্ষে, আপনাদরে দায়িত্ব নিতে হবে। নিজেদের রক্ষার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম এই নায়ক বলেন, গোপালগঞ্জের সাথে কোনো বৈষম্য হবে না। কিন্তু গোপালগঞ্জে কোনো সন্ত্রাসীদের আস্তানা সহ্য করব না। তিনি বলেন, এই আওয়ামী লীগ সনাতন ভাই-বোনদের জমি দখল করেছে। আমরা সকল ধর্মের অধিকার মান মর্যাদা রক্ষা করব।
তিনি প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, আজ কোন সাহসে এখানে মুজিববাদীরা আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে। গোপালগঞ্জে কারা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। আমরা আবার আসব। গোপালগঞ্জকে মুজিববাদীদের হাত থেকে মুক্ত করেই ছাড়ব।
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে পৌরপার্কে আয়োজিত সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ। হামলা উপেক্ষা করে এনসিপির নেতারা সমাবেশ মঞ্চে আসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ প্রমুখ। এসময় মঞ্চ থেকে ‘মুজিববাদ-মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিয়ে পুরো এলাকা মুখরিত করে তোলেন এনসিপির নেতাকর্মীরা।
এর আগে, সমাবেশ মঞ্চ ঘিরে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এসময় সাউন্ড বক্স, মাইক, চেয়ার ভাঙচুরসহ উপস্থিত এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়।
সকালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের ওপর হামলা চালায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।