চরম অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তীব্র বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার পর রবিবার নতুন সরকার নিয়ে একমত হতে দেশটির বিরোধী দলগুলো বৈঠক করেছে।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বাসভবন, তার সমুদ্র তীরবর্তী কার্যলয় ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অবস্থান করছেন এবং তারা বলছেন, পদত্যাগ আনুষ্ঠানিক না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করবেন।
প্রেসিডেন্টের অবস্থান এখনো অজ্ঞাত। তবে তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জনসাধারণের কাছে রান্নার গ্যাসের চালান অবিলম্বে বিতরণের আদেশ দিয়েছেন তিনি। এ থেকে বোঝা যায় তিনি এখনো কর্মরত।
শহরের চারপাশে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সেনা সদস্যরা কেবল দূর থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন। দেশটির চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ শভেন্দ্র সিলভা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে জনসাধারণের সহযোগিতা চেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন দখল করা মানুষজন বাইরের রান্নাঘরে রান্না করেছেন; ক্যারাম খেলেছেন এবং সোফায় ঘুমিয়েছেন।
প্রধান বিরোধীদল ইউনাইটেড পিপলস ফোর্সের এক শীর্ষ কর্মকর্তা রঞ্জিত মাদুমা বান্দারা বলেছেন, অন্যান্য দল ও রাজাপাকসের ক্ষমতাসীন জোট থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে পৃথক আলোচনা হয়েছে এবং আরও বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কবে একটি চুক্তি হতে পারে তা অস্পষ্ট।
এর আগে এমএ সুমন্থিরন নামে আরেক বিরোধী আইনপ্রণেতা জানান, সব বিরোধীদল একত্রিত হয়ে সহজেই সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ১১৩ সদস্য সংগ্রহ করতে পারে। এর মাধ্যমে তারা রাজাপাকসেকে নতুন সরকার গঠন ও পদত্যাগের আহ্বান জানাবেন।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, নতুন সরকার গঠিত হলে তিনি অফিস ছাড়বেন এবং এর কয়েক ঘণ্টা পর সংসদের স্পিকার জানান, রাজাপাকসে বুধবার পদত্যাগ করবেন।
অর্থনৈতিক মন্দায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতিতে শ্রীলঙ্কার মানুষ খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেতে হিমশিম খাচ্ছে। এতে এই দুই নেতার ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী উভয়েই পদত্যাগ করলে সংবিধান অনুযায়ী স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্দেনা অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
ঘাটতি মেটাতে ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার শুরু করার প্রয়াসে মে মাসে রাজাপাকসে বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।