জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নরসিংদীর সিনিয়র সহকারী কমিশনার সাইফুল ইসলাম ও জেলার তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনির্বান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গুলির নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, জুলাই আন্দোলনের পর অনির্বাণ চৌধুরী নরসিংদী থেকে রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দায়িত্বে ছিলেন।
জানা যায়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেশজুড়ে আন্দোলন চলাকালে রাজধানী ঢাকার পর সবচেয়ে বেশি সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে নরসিংদীতে। এ আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায় আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
তৎকালীন সময় নরসিংদীতে জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন ড. বদিউল আলম ও পুলিশ সুপারের দায়িত্বে ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। তাদের নির্দেশনায় আন্দোলন চলাকালীন দায়িত্বে ছিলেন অনির্বান চৌধুরী ও সাইফুল ইসলাম। তখন তারা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়।
নরসিংদীতে গুলিতে নিহত ২২ জনের নাম গেজেট অনুযায়ী তালিকাভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া আহতদের গেজেটে নাম রয়েছে ৩০০ জনের।
নরসিংদীতে ১৮ ও ১৯ জুলাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ১৮ জুলাই রাবার বুলেটের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় নবম শ্রেণি পড়ুয়া তাহমিদ ভূঁইয়া তামিম (১৫)। এরপর জেলা হাসপাতাল থেকে তার লাশ স্ট্রেচারে করে ডিসি রোডে রেখে স্লোগান দিচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। সে সময় পুলিশ আবার গুলি চালায়। এতে বহু মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়।
এ ছাড়া ২০ জুলাই জেলা কারাগারে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা।
এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে বিজিবির সদস্যরা গুলি চালায় নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীসহ এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। জুলাই আন্দোলনে শুধু নরসিংদী জেলাতেই শহিদ হয়েছেন ২২ জন।