নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে চাঁদাবাজি, শ্লীলতাহানি ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী শহর যুবদলের আহবায়ক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী সুমনের বিরুদ্ধে। মোটা অংকের চাঁদা না দেওয়ায় শারীরিক হয়রানির অভিযোগ করেছেন রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রেলওয়ে স্টেশনে দায়িত্বরত সবার স্বাক্ষরকৃত এক চিঠিতে যুবদল নেতার বিচার চাওয়া হয়।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আবু তাহের মোহাম্মদ মুসা নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযুক্ত যুবদল নেতা মাহমুদুল হাসান চৌধুরী সুমন নরসিংদী শহর যুবদলের আহবায়ক।
অভিযোগে বলা হয়, স্থানীয় চাঁদাবাজ মাহমুদুল হাসান চৌধুরী (সুমন) ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করছে। তারা স্টেশনের ভিআইপি কক্ষে নিয়মিত মাদক ও জুয়ার আসর বসায় এবং যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণ করে।
সর্বশেষ, গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে মাহমুদুল হাসান চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী স্টেশনের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে স্টেশন মাস্টারসহ কর্মচারীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এসময় তারা বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত ছিল বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্টেশন মাস্টার বলেন, ‘চাঁদাবাজ সুমন ও লোকজনের অত্যাচারে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে । তারা শুধু আমাদের নয়, যাত্রীদেরও হয়রানি করছে। সুমন আমাদের একজন সিনিয়র স্টাফকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি এবং প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সে রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যতটা লাঞ্চিত ও হয়রানি করেছে, আওয়ামীলীগের আমলেও আমরা এতোটা বঞ্চনার শিকার হয়নি।’
অভিযুক্ত নরসিংদী শহর যুবদলের আহবায়ক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী সুমন বলেন, ‘যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু। তার কাছে আমার নিয়মিত যাতায়াত আছে। কিন্তু লিখিত অভিযোগে যা উল্লেখ করা হয়েছে, তা আমি অবগত নয়। আমি নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য করি। কিন্তু চাঁদাবাজি বা নির্যাতনের ঘটনা সত্য নয়।’
নরসিংদী জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমরা অবগত নই। লিখিত অভিযোগের কপি আমাদের কাছে আসেনি। বিএনপি চাঁদাবাজি ও দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন অপরাধের বিষয়ে খুব কঠোর অবস্থানে আছে। ছাত্রদল, যুবদলসহ যে কেউ অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে দলীয় শাস্তির পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করবো। তবে, তা সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হতে হবে।’
অভিযোগ গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে যে বা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।