স্বাধীনতার ৫৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় স্থাপন হয়নি কোনো ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। ফলে অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয়দের। পার্শ্ববর্তী উপজেলার ফায়ার সার্ভিস ইউনিট আসতে আসতে ততক্ষণে সব কিছুই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
নাঙ্গলকোট কুমিল্লার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। এটি জেলা শহর থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরে। ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই উপজেলার ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বসতি অনেক বিস্তৃত হলেও নেই প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ সুবিধা। ফলে বারবার ক্ষতির মুখে পড়ছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।
নাঙ্গলকোট বাজারের ব্যবসায়ী মো. তৌহিদুল হোসেন বলেন, “বিগত সময়ে আগুনে আমাদের বাজারে অনেক দোকান পুড়ে গেছে। কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস চৌদ্দগ্রাম বা লাকসাম থেকে আসতে আসতে আগুনে সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়। তারা এসে শুধু ছাইয়ের ওপর পানি দেয়। এজন্য আমরা বারবার দাবি জানাচ্ছি—নাঙ্গলকোটে যেন একটা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হয়।”
এমন দাবি শুধু ব্যবসায়ীদের নয়, উপজেলার সাধারণ মানুষেরও। কারণ, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শুধু বাজারেই সীমাবদ্ধ নয়—বাড়িঘর, দোকান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনাও বারবার আগুনে পুড়ে যাচ্ছে।
এই বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, “সরকার দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতায় থাকলেও নাঙ্গলকোটের মানুষের প্রয়োজনের বিষয়ে ভাবেনি। তবে আমরা চেষ্টা করছি, খুব শিগগিরই যেন এখানে একটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট স্থাপন করা যায়।”
মক্রমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাবেক উপজেলা সভাপতি মাজহারুল ইসলাম ছুফু বলেন, “নাঙ্গলকোটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। ফায়ার সার্ভিস না থাকায় ক্ষতির পরিমাণও ভয়াবহ। লাকসাম বা চৌদ্দগ্রাম থেকে দমকল বাহিনী সময়মতো এসে কোনো কাজ করতে পারে না। ফলে মানুষের জান-মাল বারবার ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।”
সম্প্রতি নাঙ্গলকোটে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবি জোরালো হয়েছে।
নাঙ্গলকোটবাসীর প্রাণের এই দাবির প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সাধারণ মানুষ।