নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ছিনতাই ও অপহরণ চেষ্টার অভিযোগে পুলিশের এক এসআইসহ চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের একজন এসআই মোজাম্মেল হক ডেমরা থানায় দায়িত্বরত আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার প্রভাকরদী বাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডেমরা থানার ওসি শফিকুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃত মোজাম্মেল হক (৩৭) ডেমরা থানায় দায়িত্বরত আছেন। তিনি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ময়েজ উদ্দিনের ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃত অপর তিনজন হলেন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতার মাসুদ মিয়ার ছেলে আতিকুর রহমান ওরফে সোহেল (২৯), মনজুর হোসেনের ছেলে হালিম মিয়া (২০) এবং বিজয় (২৬)।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার এই ঘটনায় আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় এসআই মোজাম্মেলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলাটি জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা তদন্ত করছে।
ডেমরা থানার ওসি শফিকুর রহমান বলেন, “মোজাম্মেল হক আড়াইহাজার থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। তবে কী মামলায় তিনি গ্রেপ্তার আছেন এই বিষয়ে আমরা বিস্তারিত এখনও পাইনি। যেহেতু আড়াইহাজার থানা আমাদের আওতার বাইরে, আমরা খোঁজখবর করছি।”
তবে একই মামলায় গ্রেপ্তার বাকি তিন আসামি ডেমরা থানার কোনো সদস্য নন বলে তিনি জানান।
আড়াইহাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও বর্তমান ওসি সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করানহলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে এই থানার এসআই নাহিদ মাসুম বলেন, “ছিনতাইয়ের শিকার সজীব আড়াইহাজার থানায় মামলা করেছেন। মামলাটি বর্তমানে ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। আসামিদের তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
অভিযোগের বরাতে আড়াইহাজার থানা পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সজীব নামে এক ব্যক্তি ও তার বন্ধু রাসেল মিয়া রূপগঞ্জের গাউসিয়া থেকে সিএনজিযোগে নিজ বাড়ি আড়াইহাজারের প্রভাকরদী আসছিলেন। পথে সজীব তার মামার সঙ্গে দেখা করতে আড়াইহাজারের প্রভাকরদী বাজার সংলগ্ন আবদুর রউফের ভাঙারির দোকানের সামনে কাশবনের মাঠে নামলে সেখানে এসআই মোজাম্মেলসহ কয়েকজন তাদের ঘিরে ফেলেন। এসআই মোজাম্মেলের কাছে থাকা পিস্তল বের করে নিজেদের পুলিশের সদস্য বলে পরিচয় দেন এবং সজীব ও তার বন্ধু রাসেলকে হাতকড়া পরিয়ে দেন। এই সময় মোজাম্মেলের সঙ্গে থাকা অপর ব্যক্তিরা নিজেদের পুলিশের কনস্টেবল বলে পরিচয় দেন।
পরে আসামিরা সজীবের কাছে থাকা ৮২ হাজার ৫০০ টাকা, তার বন্ধু রাসেলের ৩৫ হাজার টাকা এবং দুজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, এক পর্যায়ে আসামিরা তাদের হাতকড়া পরানো অবস্থায় কাশবনের মাঠ থেকে রাস্তায় এনে জোর করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠানোর চেষ্টা করেন। এই সময় ভুক্তভোগীদের চিৎকার আড়াইহাজার থানার এএসআই নুরে আলমের নেতৃত্বে টহল পুলিশের নজরে আসে। তারা আসামিদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হন। পরে তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।