রাজধানীর কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পশ্চিম বামনসুর এলাকায় এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে তিন যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন—সজিব, রাকিব ও শাওন।
এছাড়া লাশ গুমের ঘটনায় তাদের প্রত্যেককে সাত বছর করে কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এরশাদ আলম জর্জ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় করে অর্থদণ্ডের টাকা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাকারে জমা দেওয়ার জন্য ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে আলী আকবর (২২) এবং মো. রিয়াজের (২২) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন।
রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা তিন আসামি রাকিব, রিয়াজ এবং শাওনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। রায় শেষে দণ্ডিত রাকিব এবং শাওনকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডিত সজিব পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
জানা যায়, ২০২২ সালের ১১ জুন কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আঁটিবাজার এলাকায় পুলিশের টহল ডিউটি চলাকালে জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে সংবাদ পায়, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের সামনে পুকুরের পানিতে একজন নারীর মরদেহ পানিতে ভাসছে। পুলিশ সেখানে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ মামলা দায়ের করে। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। প্রথমে তার পরিচয় শনাক্ত করে। ভিকটিমের বান্ধবী বৃষ্টি আক্তার সাক্ষী হিসেবে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানায়, এটা তার বান্ধবী মারিয়ার মরদেহ। পরে পুলিশ শাওনকে গ্রেফতার করে। শাওন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। সেখানে জানায়, তিনিসহ মো. রাকিব, মো. সজিব, মো.আলী আকবর মিলে ভিকটিম মারিয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের পানিতে ফেলে রাখে। পরে রাকিব এবং সজিব গ্রেফতার হয়। তারাও একই কথা বলে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
মামলাটি তদন্ত করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক অলক কুমার দে ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। মামলার বিচার চলাকালে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল।