মো.খোকন, নেত্রকোণা প্রতিনিধি: স্থানীয়দের মাঝে বিমল চন্দ্র মারাক–বিজ্ঞান কবিরাজ হিসেবেই পরিচিত। কবিরাজি চিকিৎসায় হাত তার পাকা থাকুক কিংবা নাই থাকুক তবে চিকিৎসার নামে মোটা অংকের টাকা হারিয়ে নেওয়া, নারী-কেলেঙ্কারিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগের খ্যাতি তাঁর ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি নেত্রকোণা জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলার কলমাকান্দা, লেঙ্গুড়া ইউনিয়ন উত্তর তারানগর গ্রামের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডের এসব অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে জানতে বিজ্ঞান কবিরাজের বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা হয় প্রতিবেদকের। তখন দেখা যায় তিনি নিজেই অন্যের কাঁদে চেপে চলাফেরা করেন এবং কথাও বলতে পারেন না।
এ সময় ধর্মীয় এবং সামাজিক স্বীকৃতি না পাওয়া তার তৃতীয় পক্ষের স্ত্রী রুপরেমা বলেন, ‘তার(স্বামীর) স্বপ্নে পাওয়া তন্ত্রমন্ত্র ও তাবিজ কবজ দিয়ে রোগীদের সুস্থ করে থাকি। তিনি (স্বামী)আমাকে ইশারায় দেখিয়ে দেন আমিই সব করি।’
তৃতীয় স্ত্রীর ছেলে ইনমানুয়েল রেমা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘আমরা কি করি না করি এটা আপনারা জিজ্ঞেস করার কে? আপনারা এখান থেকে ভালোয় ভালোয় চলে যান, না হয় আমাদের হাত কিন্তু অনেক লম্বা’ এসব বলে উপস্থিত সাংবাদিকদের হুমকি দেন তিনি।
বিজ্ঞান কবিরাজ’র প্রথম সংসারের বড় ছেলে সোহাগ মানখিন জানান, ‘শুরু থেকে অনেক বার নিষেধ করার পরেও তিনি লোকের সঙ্গে এই কবিরাজির নামে ভাওতাবাজি করেন। পাশাপাশি অবৈধভাবে একাধিক মহিলাদের সঙ্গে মেলামেশা করেন। এগুলো আমরা কখনো বিশ্বাস করিনা।
তিনি আরও বলেন, তিনি(বাবা) আমাদের ধর্মীয় একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। কবিরাজি করার কারণে স্কুল থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়। তারপরও তিনি থেমে নেই। আমাদের সঙ্গে ঝগড়া করে সামাজিক এবং ধর্মীয় স্বীকৃতি না থাকা সত্ত্বেও অবৈধ ভাবে রূপরেমা নামের এক মহিলাকে নিয়ে অসামাজিক এবং লোক ঠকানো তার এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানা অফিসার ইনচার্জ জানান, ‘আপনাদের মাধ্যমে আমরা বিষয়টি অবগত হয়েছি। লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভিট পুলিশিংয়ের দায়িত্বে যিনি আছেন যথাযথ তদন্ত করে এর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে বলে দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ ভাঁওতাবাজি। কবিরাজি বলতে কোন কিছুই নাই। আমি অবগত ছিলাম না, তদন্ত করে এর আইনানুগভাবে ব্যবস্থা নিব।’
এ ব্যাপারে নেত্রকোণা জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. সেলিম মিয়ার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, মেডিকেল সাইন্সের ভাষায় কবিরাজি বলতে কোন কিছুই নেই। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখব তার ব্যাপারে কি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়।