বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়(বুয়েট)
শিক্ষক নিখিল রঞ্জন ধরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে ২০২১ সালের নভেম্বরে এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার(৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার চিফ মেট্রপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বুয়েটের অধ্যাপক নিখিল রঞ্জনসহ ১৬ জনকে আসামি করে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেয়। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আজ রবিবার অধ্যাপক নিখিল রঞ্জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
তবে প্রশ্নপত্রের ফাঁসের অভিযোগ ওঠার সময়ই ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর অভিযোগ অস্বীকার করে নিখিল রঞ্জন ধর গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘আমি কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত নই। বলা হচ্ছে, আমি ছাপাখানা থেকে প্রশ্নপত্র ব্যাগে ঢুকিয়ে নিয়ে আসতাম। ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’
বুয়েট কর্তৃপক্ষ পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের তদন্তে নাম আসার পর বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধানের পদ থেকে নিখিল রঞ্জন ধরকে অব্যাহতি দেয়। এর পর থেকে তাঁকে কোনো পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন না করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ডিবির তদন্তে পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে বুয়েট শিক্ষক নিখিল রঞ্জন ধরসহ ৩৪ জনের নাম উঠে এসেছে। এক্ষেত্রে ১৮ জনের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা না পাওয়ায় তাঁদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ছয়জন আসামি। এদের মধ্যে দুজনের জবানবন্দিতে নিখিল রঞ্জন ধরের নাম উঠে এসেছে। আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন দেলোয়ার তাঁর স্বীকারোক্তিতে নিখিল রঞ্জনের নাম উল্লেখ করেছেন। তিনি যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়। পাশাপাশি আদালতের অনুমতি নিয়ে তাঁর ব্যাংক হিসাবের তথ্য পর্যালোচনা করা হয়।
প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম সদস্য জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল, আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন দেলোয়ার, কর্মী মুক্তারুজ্জামান রয়েল, রবিউল আউয়াল, পারভেজ মিয়া ও মিজানুর রহমান। এই ছয়জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাঁদের জবানবন্দিতে এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের পরিকল্পনা, অর্থ গ্রহণসহ পুরো বিষয়ের বিস্তারিত উঠে আসে।