বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ বলে তারা নাকি সবচেয়ে ভালো নির্বাচন করতে পারে। এটা ভুল, আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতেই জানে না। আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না।
তিনি বলেন, আমরা দুটি নির্বাচন দেখেছি। প্রত্যেকটিতে আওয়ামী লীগ মানুষকে বোকা বানিয়েছে। এ নির্বাচন ব্যবস্থাতে কখনোই বাংলাদেশের শান্তি আসবে না স্থিতিশীলতা আসবে না। তাই নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে।
রোববার (৯ জুলাই) বিকেলে সিলেট আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতা দখল করে আবারও ক্ষমতাকে সম্প্রসারিত করার চেষ্টা করছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সমগ্র জাতি সংকটের মুখে আছে। এই জাতির অস্তিত্ব থাকবে কি না, স্বাধীনতা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারব কি না, সেটা এখন সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। সামনে আরেকটি নির্বাচন এসে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছে, সংবিধান দিয়ে নির্বাচন হবে, যে সংবিধান তারা অসাংবিধানিকভাবে বেআইনিভাবে কেটে ছিঁড়ে তৈরি করে রেখেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা চেয়েছি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে। কেন বলেছি, মানুষ একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে তাই। নির্বাচনের সময় একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার থাকতে হবে। না হলে আওয়ামী লীগ যদি থাকে, কেউ ভোট দিতে পারবে না। আগে অনেকে কেন্দ্রেও যেতে পারেনি। আমাদের এক কর্মীর দুই পা কেটে ফেলা হয়েছিল। সরকারের অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাদের নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম করে ফেলা হয়েছে। তার স্ত্রী লুনা বলেছেন, তার মেয়ে যখন সামনে আসে, তখন তিনি কথা বলতে পারেন না। এখনো তার মা-সন্তানরা বাসার দরজার দিকে তাকিয়ে থাকেন।
তিনি বলেন, ৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। এখানে অনেকে আছে যারা যুদ্ধ করেছেন। কেন যুদ্ধ করেছিলেন, একটিমাত্র কারণে, আমরা সকলের মত প্রকাশ করব, নিজেদের অধিকারকে নিশ্চিত করব, সকলের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে, চিকিৎসার উন্নতি হবে। শেখ মুজিবুর রহমান চিন্তা করেছিলেন এ দেশ এই রকম থাকবে না, তাই তিনি বাক্শাল তৈরি করেছিলেন। আজকে আবার শেখ হাসিনা ভিন্নভাবে একদলীয় সরকারের মাধ্যমে বাকশাল চাপিয়ে দিতে চাচ্ছেন। দুইটা নির্বাচন করেছেন আগে, বেআইনিভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকার বিদ্যুৎ খাতে ১ লাখ ৪৮ কোটি টাকা এক বছরে লোকসান দিয়েছে। পদ্মা সেতু ১০ হাজার কোটি টাকায় করা যেত, সেখানে ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। বছরে পর বছর সারের দাম বাড়তে থাকে। করোনার সময় লুটপাট হয়েছে, শিক্ষা খাতে লুটপাট হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী ১২ তারিখে ঢাকায় সমাবেশ হবে। এ সমাবেশ থেকে ঘোষণা আসবে সরকার পরিবর্তনের।সরকারকে উৎখাত করার জন্য, খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করার জন্য, তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার জন্য। সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সমাবেশে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ মাহমুদ জুয়েলের যৌথ পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাবেক এমপি শাম্মি আক্তার , মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি নাসের রহমানসহ সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।