নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার ঘোষণা দিয়েছেন। তার বিতর্কিত এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়েছে।
মো. আবুল কালাম আজাদ ওই বক্তব্যে জানান, আমার পাঁচটা বছরের (২০১৪-২০১৮) বেতন ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না। আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে) ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যে ভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না।
তিনি আরও বলেন, ওই সময় এক টাকাও খরচ হয়নি আমার। শুধু ব্যাংকে ২৫ লাখ টাকা জমা রাখতে হয়, ওটা রেখেছি। এক টাকাও খরচ নাই, ২৫ লাখ টাকা তুললাম। ট্যাক্স ফ্রি ২৭ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছিলাম। চাইলে ১ কোটি টাকা দিয়ে কিনতে পারতাম। আমার যখন টাকা নাই তখন ২৭ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। এবার আমি কিনব, ওই টাকা দিয়ে কিনব। ওই যে টাকা, ওই টাকা তুলে নিব আমি। খালি ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা তুলব।
গত মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) নাটোরের লালপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য এসব কথা বলেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুধবার রাতে ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়।
সংসদ সদস্য হয়ে প্রকাশ্যে এমন দুর্নীতি করার বক্তব্যে আলোচনা-সমালোচনার শুরু হয়েছে জেলাজুড়ে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আখতার একটি গণমাধ্যমকে বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্যে (সংসদ সদস্য) উনি বলেছেন, এটাতে আমার কোনো কথা নেই।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার বক্তব্যে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে অনেকেই এ রকম করে। আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।
এমন বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি নাটোর জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। তার (সংসদ সদস্যের) এমন বক্তব্যে তার সহকারী এবং দলীয় নেতাকর্মীরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন।
তিনি বলেন, এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লংঘন অন্যদিকে নির্বাচনী বিধিরও লংঘন। নির্বাচনী ব্যয় অনুযায়ী একজন সংসদ সদস্য ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না। সংসদ সদস্যের কাছে গঠনমূলক বক্তব্যেরও প্রত্যাশা করি।