নির্বাচন প্রসঙ্গে সম্প্রতি জাপানি রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে জাপান কেন, কোনও রাষ্ট্রদূতের নাক গলানো আমরা মেনে নিতে পারি না। তাদের আবারও সতর্ক করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভোম রাষ্ট্র। একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে। দেশের আত্মমর্যাাদার ক্ষেত্রে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মেহেরপুরের মুজিবনগরে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত আম্রকাননের সার্বিক পরিচর্যা কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সংবিধানের আর্টিকেল ১২৬ এ স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, দেশের নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। আর তাদের সহযোগিতা করবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ বিভাগ। তাদের সমন্বয়ে দেশে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে। এ সংক্রান্ত সকল নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদ।
এসময় বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি এর আগেও আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। মানুষ হত্যা করেছে। তাদের সকল কার্যক্রম রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবে আওয়ামী লীগ।
দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা থাকলেও ধান ও সবজির ফলন ভালো হওয়ায় এখন সে আশঙ্কা নেই বলে দাবি করেন মন্ত্রী। দেশে প্রচুর পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে।
ডলার সংকট একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা,উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন,ইউক্রেন যুদ্ধের শেষে সমস্যা আর থাকবে না। ডলার সংকট সমাধানে কাজ করছে সরকার।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। জাপান বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অবাধ, স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় জানিয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচন সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি শুনেছি পুলিশ কর্মকর্তারা নির্বাচনের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভোট দিয়ে ভর্তি করে ফেলেছেন। এ ধরনের ঘটনা এর আগে অন্য কোনো দেশে আমি শুনিনি। এ ধরনের ঘটনা আর কখনোই দেখতে চায় না জাপান। সরকার আমাদের জানিয়েছে যে আগামী নির্বাচন অবাধ ও স্বচ্ছ হতে যাচ্ছে। ফলে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এতে অংশগ্রহণ করবে এটিই আমার আশা।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ইতো নাওকি বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের পরই ঢাকার জাপান দূতাবাস উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি প্রকাশ করে। এ বিষয়টি বেশ অস্বাভাবিক, কারণ দূতাবাস এ ধরনের কাজ করে না। জাপান আশা করে আগামী নির্বাচন ভালো হবে, অবাধ ও স্বচ্ছ হবে।’
নির্বাচন নিয়ে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য ব্যক্তিগত নাকি জাপান সরকারের- জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে জাপান সরকারের প্রতিনিধি। আমার বক্তব্য হচ্ছে জাপান সরকারের বক্তব্য।’