নির্বাচন প্রশ্নে বর্তমান ইসির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকে বসবে না বিএনপি। ইসি যে চিঠি দিয়েছে, তারও জবাব দেবে না।
মঙ্গলবার বিকালে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য একটি গণমাধ্যমকে এমনটা জানান।
তিনি বলেন, তবে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিএনপি তাদের বক্তব্য ও অবস্থান জানিয়ে দেবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়েই তাদের প্রশ্ন রয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে কোনো ফল আসবে না। তাছাড়া নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই ছিল।
এ সদস্য আরও বলেন, বিএনপি শুধু নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের সংলাপে যাবে। অন্য কোনো আলোচনায় তারা অংশ নেবেন না। স্থায়ী কমিটির সভায় সে সিদ্ধান্ত আবার নেওয়া হয়েছে। দলটির সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে ২৩ মার্চ ইসি যে চিঠি পাঠিয়েছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সেই চিঠি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয় ইসির সঙ্গে কোনো আলোচনায় না যাওয়ার।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে ইসির সঙ্গে কোনো আলোচনা করে লাভ নেই। কারণ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ইসির কোনো ক্ষমতা নেই। তাছাড়া ইসি নিজেও ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ এবং সরকারের ‘মদদপুষ্ট’। হঠাৎ করে বিএনপিকে আলোচনার জন্য ইসির চিঠিকে গণতান্ত্রিক বিশ্বের ‘চাপ এড়ানোর কৌশল’ বলেও মনে করছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কেউ কেউ।
বিএনপির নেতারা এরইমধ্যে জানিয়েছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করাটা অর্থহীন।
নির্বাচন কমিশনের এ আমন্ত্রণ সরকারের কূট-কৌশলের অংশ। সরকারের পরামর্শে সংলাপের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এটা এক ধরনের নাটক, যার অংশ হতে চায় না বিএনপি। চিঠির জবাব দেওয়া হলে সেটির একটি গুরুত্ব আছে। তাই আমন্ত্রণপত্রের কোনো জবাব দেওয়া হবে না। বরং নির্বাচন কমিশনের হঠাৎ এই উদ্যোগ নিয়ে নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন।
বৈঠকে দলের নেতারা আরও বলেন, এটি নির্বাচন কমিশনের রুটিনওয়ার্ক। কেউ কেউ চিঠির আমন্ত্রণকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। একজন নেতা বলেন, বিদেশিদের চাপে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। সরকার জানুয়ারির আগে নির্বাচন করতে চায়। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগেভাগে আলোচনা শুরু করছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় আরও অংশ নেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।