হামাসের অভিযান থেকে শুরু করে ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে চলমান যুদ্ধে গত কয়েকদিনে গাজা ও দক্ষিণ লেবাননে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ সাদা ফসফরাস ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ তথ্য জানিয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থার কর্মকর্তা আহমেদ বেঞ্চেমসি বার্তা সংস্থা আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, ১০ ও ১১ অক্টোবর আকাশে ছোড়া সাদা ফসফরাসের ভিডিওগুলো যাচাই করতে সক্ষম হয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাত্কার নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ এবং ভিডিওগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
বেঞ্চেমসি বলেন, সাদা ফসফরাস বিভিন্ন সামরিক কৌশলের জন্য ব্যবহার করা হয়। এর ফলে মানুষ, বাড়িঘর, ক্ষেত ও বেসামরিক ভবন মারাত্মকভাবে পুড়ে যেতে পারে। আশেপাশে যাই থাকুক না কেন জ্বলে যেতে পারে এই পদার্থের ফলে।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাদা ফসফরাস আকাশপথে নিক্ষেপ করা হলে ভূমিতে বোমা ফেলার চেয়ে বেশি বেসামরিক ও অবকাঠামোগত ক্ষতি হতে পারে। এটি খুব ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। এই পদার্থ বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলে জ্বলে ওঠে এবং ৮১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত খুব তীব্র তাপ তৈরি করে।
পদার্থটি মানুষের হাড় পর্যন্ত মাংস পুড়িয়ে দিতে পারে উল্লেখ করে আহমেদ বেঞ্চেমসি বলেন, এটি রক্ত প্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে। দেহের বিভিন্ন অঙ্গ অকার্যকর হতে পারে। এ কারণে সাদা ফসফরাস দিয়ে সামান্য আক্রমনও মানুষের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই চরম নৃশংসতার পরিচয় দিয়েছে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরায়েল। এর শিকার গাজার বেসামরিক বাসিন্দারা। তাদের বাহিনীর হাত থেকে থেকে ছাড় পাচ্ছে না শিশু ও নারীরাও।
জানা গেছে, গত পাঁচ দিনের অব্যাহত হামলায় দেড় হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহতের মধ্যে চার শতাধিক শিশু রয়েছে। প্রায় ২৫০ নারী অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু তারপরও ইসরায়েলের হামলা থামছে না।
হামলার সঙ্গে গাজায় খাবার সরবরাহ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিও বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। জিম্মিদের মুক্তি না দিলে এগুলোর কোনো কিছুই গাজায় সরবরাহ না করার অঙ্গীকার করেছে তারা।
ফলে গাজায় মানবিক সংকট গভীর থেকে আরও গভীর হয়েছে। হাসপাতালগুলো মর্গে পরিণত হচ্ছে।