নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, হত্যাচেষ্টা এবং লাশ গুমের হুমকির ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে সড়ক অবরোধ করে তারা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা বেগমগঞ্জ চৌরাস্তার মূল সড়কে অবস্থান নেন এবং রাস্তায় বসে পড়েন। এ সময় তারা বিক্ষোভ শুরু করে এবং প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার সঙ্গে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার (১২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অনিমেষ দেব নাথ ও তার দুই সহপাঠী চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালী ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। সন্ত্রাসীরা তাদের মধ্যে একজনের গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করে এবং অন্যদের কিল, ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করে। হামলাকারীরা ৬,০০০ টাকা ছিনিয়ে নেয় ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ঘটনার পরপরই নিকটস্থ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় ৭-৮ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার না করায় তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বক্তব্যে অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ACCE) বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মেহেদী বলেন, “ঘটনার পরপরই আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু এখনও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।”
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদুল জান্নাত মারিয়া বলেন, “এক জুলাই আমরা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছি, প্রয়োজনে আবারো সন্ত্রাসীদের পতন ঘটাবো। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।”
বিজিই বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দিন মহসিন বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বসে থাকার জন্য নয়, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বেতন দেওয়া হয়। তারা যদি ব্যর্থ হয়, ছাত্রজনতা এর জবাব দিতে জানে।”
ফলিত গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল করিম বলেন, “ঘটনার পরেও কোনো বিচার না হওয়া এবং প্রশাসনের দুর্বল অবস্থানের কারণেই শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে। আমি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি— হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনুন।”
সবশেষে শিক্ষার্থীরা ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, এই সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এরপরই তারা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেন।