নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে অবমাননা করা ও জুতার মালা পরানোর ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক আক্তার হোসেন টিংকুকে আওয়ামী লীগের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বহিষ্কৃত আক্তার হোসেন টিংকু মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এবং নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
বৃহস্পতিবার নড়াইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচীন কুমার চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকের সই করা নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, ‘গত ১৮ জুন মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্রের স্ট্যাটাস নিয়ে এক সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। আপনি ওই কলেজের একজন শিক্ষক এবং ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শেষে দেখা যায়, আপনার উপস্থিতিতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে বের করে আনা হয়, যাহা নিন্দনীয়, শিক্ষকসমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করার শামিল। ’
এতে আরও বলা হয়, ‘বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, মিডিয়ার খবরে আপনাকে জড়িত করে সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। সে কারণে আপনি এর দায়িত্ব এড়াইতে পারেন না এবং আমরা মনে করি আপনি সভাপতি হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ’
‘উপরোক্ত কারণে আপনাকে উক্ত বিষয়ে এই পত্র পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারীদ্বয়ের নিকট লিখিত কারণ দর্শাইতে বলা গেল এবং অদ্য হইতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া গেল। ’
এ প্রসঙ্গে নড়াইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আকতার হোসেনকে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। ’
উল্লেখ্য, ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে। সে সময় গুজব ছড়ানো হয় যে, ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।
এরপর পুলিশ পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি।
শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, লাঞ্ছিত শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের আগে ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন আক্তার হোসেন টিংকু। তবে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের কারণে প্রায় দেড় বছর আগে আক্তারকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় স্বপন কুমারকে।