ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে উত্তেজনা থামছে না। গোলাগুলির ঘটনা অব্যাহত আছে। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার ভারত সরকার জানিয়েছে, পাকিস্তানি বিমান আর ঢুকতে পারবে না ভারতের আকাশসীমায়।
সামরিক বিমান তো বটেই, পাকিস্তান রেজিস্টার্ড, পরিচালিত বা লিজ নেওয়া বাণিজ্যিক বিমানগুলির জন্যও ভারতের দরজা আপাতত বন্ধ।
গতকাল ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত পাকিস্তানের কোনো বিমান ভারতের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে পারবে না। এই নির্দেশকে পাকিস্তানের পদক্ষেপের পালটা প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছে কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
পহেলগাম হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইতিমধ্যেই ভারতের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। এ বার ভারতের এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করলো।
ভারতীয় সেনা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ২৯-৩০ এপ্রিল রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পোস্টগুলি জম্মু ও কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নওশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টরের বিপরীতে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে বিনা প্ররোচনায় ছোট অস্ত্রের গুলিবর্ষণ শুরু করে। ভারতীয় সেনাবাহিনী দ্রুত এবং আনুপাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে দাবি করেছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণে ধ্বংস হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট ও বাঙ্কার।
সংবাদ মাধ্যমটি বলেছে, ভারতীয় সেনারা বিনা উসকানিতে ছোট অস্ত্রের গুলি চালিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করলে গুলিবর্ষণ করে পাল্টা জবাব দেয় পাক বাহিনী।
এরই মধ্যে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানিয়েছেন, তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে, ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে ভারত।
এর আগে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেনাবাহিনীকে ‘সম্পূর্ণ অপারেশনাল স্বাধীনতা’ দেওয়ার ঘোষণা দেন, যাতে তারা পহেলগাম হামলার প্রতিক্রিয়া জানানোর পদ্ধতি, লক্ষ্য ও সময় স্বাধীনভাবে নির্ধারণ করতে পারে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই অঞ্চলের স্বঘোষিত বাদী, বিচারক ও শাস্তিদাতা হিসেবে ভারত যে ধরনের ভূমিকা রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি।’
তিনি আরো জানান, পাকিস্তান নিজেই গত দুই দশক ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং বিশ্বব্যাপী যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে আসছে।
তারার আরো বলেন, পহেলগাম হামলার পর পাকিস্তান দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ভারত সংঘাত ও অযৌক্তিকতার পথ বেছে নিয়েছে, এর পরিণতি গোটা অঞ্চলের জন্য তো বটেই, এমনকি সারা বিশ্বের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।