বাজার থেকে কিনে আনা পুঁটি মাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করেন স্বামী। এরপর স্বামী নিজেই থানায় উপস্থিত হয়ে দেন ঘটনার বর্ণনা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে এমনটাই ঘটেছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজার এলাকার উত্তর ত্রিশ গ্রামে।
অভিযুক্ত স্বামীর নাম বাছির উদ্দিন (৩৫)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সাহাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে। নিহত স্ত্রী মৌসুমী আক্তার (২৯) দেবিদ্বার উপজেলার নবীপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাছির উদ্দিন একটি মেডিসিন কোম্পানির মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ এরিয়ার রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে চাকরি করেন। সেই সুবাদে আড়াই বছর ধরে উত্তর ত্রিশ গ্রামের আলাল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া আছেন। আজ দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ বাজার থেকে পুঁটি মাছ কিনে নিয়ে যান বাছির উদ্দিন। সেই মাছ নিয়ে বাসায় যেতেই স্ত্রী মৌসুমী আক্তার মাছ কাটাকুটি করতে পারবেন না বলে স্বামীর ওপর মাছ ছুড়ে মারেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাছির উদ্দিন গলা চেপে ধরে শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে হত্যা করেন। পরে তিনি নিজেই মুরাদনগর থানায় উপস্থিত হয়ে পুলিশকে তার স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি জানান।
বাছির উদ্দিন থানায় উপস্থিত হয়ে পুলিশকে ঘটনার বর্ণনার বরাতে পুলিশ জানায়, ৯ বছর আগে তিনি পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন মৌসুমী আক্তারকে। তাদের চার বছর বয়সী যমজ এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিনের সংসারে মৌসুমী তাকে প্রতিনিয়ত মানসিকভাবে যন্ত্রণা দিতেন। তবে স্ত্রীকে হত্যার কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছিল না তার। বাজার থেকে আনা পুঁটি মাছ যখন তার ওপর ছুড়ে মারেন, তিনি তখন নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে গলা টিপে হত্যা করেন।
ঘাতক বাছির উদ্দিনের বাড়ির মালিক আলাল বলেন, ‘দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে তারা আমার বাসায় ভাড়া থাকে। আমার চোখে দেখা বাছির একজন অত্যন্ত ভালো মানুষ। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো পারিবারিক কলহ আমাদের চোখে পড়েনি। কেন এই হত্যাকাণ্ড, কিছুই বুঝতে পারছি না।’
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ‘আজ দুপুরের দিকে যখন বাছির উদ্দিন থানায় উপস্থিত হয়ে আমাকে জানায় যে সে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে, তখন প্রথমে আমার বিশ্বাস হয়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জানি ঘটনা সঠিক। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বাছির উদ্দিন থানা হেফাজতে আছে।