রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির জামালপুর বাজারে দাম নির্ধারণের পর মণ প্রতি ১০০ টাকা কম দেওয়ায় বুধবার সকাল ও বিকেলে পেঁয়াজ বিক্রেতা ও আড়তদারের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
সংঘর্ষের বিষয়ে স্থানীয়দের ভাষ্য, গোসাই গোবিন্দপুর গ্রামের পেঁয়াজ বিক্রেতা বাবু শেখ (৬০) ৮৫ কেজি পেঁয়াজ বিক্রির জন্য বুধবার বেলা ১১টার দিকে জামালপুর বাজারে নিয়ে আসেন। বাজারের আড়তদার তৈয়ব আলী মণ্ডল পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দেন প্রতি মণ ১ হাজার ৯২০ টাকা। বিক্রির পর পেঁয়াজ আড়তদারের ঘরে মেপে দেওয়ার জন্য নিয়ে গেলে আড়তদারের ভাগনে সোহেল মৃধা ‘পেঁয়াজের মান ভালো না’ বলে মণপ্রতি ১০০ টাকা দাম কম দিতে চান। সেই সঙ্গে ৪ কেজি পেঁয়াজ কম ধরে ৮১ কেজির দাম নির্ধারণ করেন।
এর প্রতিবাদ করলে সোহেল মৃধা পেঁয়াজ বিক্রেতার মুখে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।
পেঁয়াজ বিক্রেতা ভয়ে তখন কম টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। ঘটনা জানাজানির পর তার স্বজনরা আড়তদারের দোকানে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে পুনরায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম ফরিদ হোসেন বাবু বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে বুধবার বিকেলে তার ব্যক্তিগত অফিসে আসার আহ্বান জানান।
মিমাংসা করতে সন্ধ্যায় উভয় পক্ষ বসার পর ইউপি চেয়ারম্যান পেঁয়াজ বিক্রেতার কাছে আড়তদারের ভাগনে সোহেলকে মাফ চাইতে বলেন। বিষয়টি তখনই নিষ্পত্তি হয়ে যায়। কিন্তু শালিসের পর চেয়ারম্যানের ঘর থেকে বের হয়ে উভয় পক্ষ আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এতে পেঁয়াজ বিক্রেতাসহ দুইজন এবং আড়তদারের গ্রুপে ৩ জন আহত হয়েছেন বলে তারা দাবি করেন। পেঁয়াজ বিক্রেতা নিজে এবং তার নাতি রাহুল শেখ (১৫) আহত হয়ে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন।
আড়তদারের গ্রুপের ৩ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করলেও নাম বলতে পারেননি।
পেঁয়াজ বিক্রেতা বাবু শেখ বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করার পর কম দেওয়া এবং মণ প্রতি ওজনে ২ কেজি করে কম ধরার প্রতিবাদ করলে আড়তদারের লোকজন আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এ নিয়ে চেয়ারম্যান শালিস করার পর আমাদেরকে লক্ষ্য করে তারা কটূক্তি করতে থাকলে পুনরায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।’
জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম ফরিদ হোসেন বাবু বলেন, ‘বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রথম পর্যায়ের সংঘর্ষ নিয়ে আমি মীমাংসা করে দিয়েছিলাম। উভয় পক্ষ মেনেও নিয়েছিল। কিন্তু আমার এখান থেকে বের হয়েই তারা আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে আড়তদার তৈয়ব আলী মণ্ডল বলেন, ‘আমি মোটরসাইকেলে রয়েছি। পরে আপনার কথা বলব।’ এ সময় তার পক্ষের আহত তিনজনের নাম জানতে চাইলে তিনি পরে জানাবেন বলে জানান।
বালিয়াকান্দি থানার এসআই মো. টিটুল হোসাইন বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ ঘটনায় রাত ১২টার পর পেঁয়াজের আড়তদার তৈয়ব মণ্ডল বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’