গত বছর থেকেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তবে গেল মাসে খুব দ্রুত জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকে দেশটিতে। এরপরই পেট্রোলের দাম কমায় মুদ্রাস্ফীতির হার কিছুটা কমে এসেছে।
ভোক্তাদের ব্যাপক চাহিদা এবং করোনা মহামারীতে সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা এই দুই কারণে মূলত দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকে। অন্যদিকে চীনে করোনা মহামারীর কারণে শাটডাউন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ ইত্যাদি বিষয়গুলো গম এবং তেলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহে চাপ সৃষ্টি করে।
দেশটির শ্রম বিভাগ বলছে, জুলাই মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৮.৫%, যেখানে জুন মাসে এই হার ছিল ৯.১%। তবে জ্বালানী বাদে মুদি এবং আবাসনসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বাড়তেই থাকে। জিনিসপত্রের এই উচ্চমূল্য ইতিমধ্যেই অনেক পরিবারকে বিপাকে ফেলেছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
দেশটিতে চাকরির বাজার এখনো উর্ধ্বগতির দিকে থাকলেও ভোক্তা এবং ব্যবসায়িক সেন্টিমেন্টের মতো সূচকগুলো মুদ্রাস্ফীতির কারণে প্রভাবিত হচ্ছে। জানা যায়, বর্তমানে দেশটির দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হার ১৯৮০ দশকের শুরুর তুলনায় অনেক বেশি।
গত ১২ মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদি জিনিসের দাম ১৩.১% বেড়েছে, যা ১৯৭৯ সালের পর থেকে সবচেয়ে বড় বার্ষিক বৃদ্ধি। এদিকে কফির বাড়তি দাম জুলাই মাসে খরচ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধুমাত্র জুন মাসেই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৩.৫%।
আবাসন, চিকিৎসাসেবা এবং বিনোদনমূলক কর্মকান্ডের দামও জুন থেকে বেড়েছে। কিন্তু ব্যবহৃত গাড়ি, বিমান ভাড়া এবং পোশাক সামগ্রীর দাম কমায় কিছুটা সামঞ্জস্য বজায় ছিল।
জুনের তুলনায় গত মাসে পেট্রোলের দাম ৭.৭% কমেছে । গত জুনে পাম্পগুলোতে প্রতি গ্যালন পেট্রোলের দাম ৫ ডলারের বেশি বেড়ে গিয়ে রেকর্ড গড়েছিল।
দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল করার জন্য মার্চ মাস থেকে সুদের হার বাড়িয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে ঋণ গ্রহণ করা আরো ব্যয় বহুল হয়ে উঠে এবং জনগণ কম ধার নিতে এবং কম খরচ করতে উৎসাহিত হয়। কিন্তু উচ্চ সুদের হার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে হ্রাস করার কারণে ব্যাংকগুলো দীর্ঘস্থায়ী মন্দার দিকে ঝুঁকছে। গত মাসেই মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ জানিয়েছে যে, এপ্রিল-জুন সময়ের মধ্যে অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে।
তবে জুলাই মাসের প্রতিবেদন সামগ্রিকভাবে অনেক বিশ্লেষকের প্রত্যাশার চেয়েও ভাল ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অর্থনীতিবিদ পল অ্যাশওয়ার্থ বলেন, ‘এখনো আমাদের আশানুরূপ মূল্যস্ফীতির পতন হয়নি। তবে এটি একটি শুরু এবং আমরা আগামী কয়েক মাসে দামের চাপ কমার উল্লেখযোগ্য লক্ষণ দেখবো বলে আশা করছি’।