আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের অর্জন নিয়ে তামাশা করা কোনো সাধারণ বিষয় নয়, ফৌজদারী অপরাধ। প্রথম আলো ও বিএনপি একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করছে। তাদের টার্গেট সরকার ও আগামী নির্বাচন।
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশেই আমরা দেখেছি স্বাধীনতা দিবসের দিন সে দেশের গণমাধ্যম অনুপ্রেরণামূলক বাণী দিয়ে উৎসাহ করে। আর প্রথম আলো তাদের প্রভুদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য জাতির সামনে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে, তরুণ প্রজন্মকে হতাশা ও উসকানি দেয়ার জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের বিষয়টি যে আমাদের রাজনৈতিক জীবনের সঙ্কট ঘনীভূত করছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়ে কী করব? শিরোনামের সংবাদ এই ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। সংবাদটি মিথ্যা, বানোয়াট, ষড়যন্ত্রমূলক; এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তিনি বলেন, দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা আরেকটি ৭৫’র প্রেক্ষাপট তৈরি করছে। যার লক্ষ্য নির্বাচন ভণ্ডল করে অসাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠা।
তিনি আরো বলেন, সাত বছরের একটি শিশুকে ১০ টাকা ঘুষ দিয়ে বক্তব্য নেয়া, সেটা কি সাংবাদিকতা? স্বাধীনতা দিবস তরুণ প্রজন্মের দেশাত্মবোধ সৃষ্টির এক অনন্য দিন, অথচ এই দিনে পলিটিক্যাল সিলেক্টটেড বিশেষ এক এজেন্ডা সেটিংয়ের উদ্দেশ্যে সংবাদটি প্রকাশ মহান স্বাধীনতাকে অস্বীকার করার শামিল।
রিপোর্টার্স উইথআউট বর্ডারের বিবৃতি নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই প্রতিষ্ঠান বলছে সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর জন্যই সরকার এ ধরনের মামলা করেছে প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে। আমি প্রথমে বলতে চাই, সরকার কিন্তু এখানে মামলা করেনি। মামলা সাধারণ একজন নাগরিকও করতে পারে। সরকার মামলা করেছে এটা সর্বাগ্রে মিথ্যা। আর ভয় দেখানোর কথা যে বলা হচ্ছে কাকে ভয় দেখাব? যাকে ভয় দেখানোর কথা বলা হয়েছে, তিনি এই দেশের মানুষকে ভয়ের মধ্যে রাখতে চেয়েছিলেন। তিনি এদেশে রাষ্ট্রকে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভয় দেখিয়েছিলেন। তিনি এদেশে রাজনীতিকে ভয় দেখিয়েছিলেন। তিনি এদেশের সংবিধানিক সরকারকে ভয় দেখিয়েছিলেন অসংবিধানিক সরকারের পক্ষে ওকালতি করে। তারপরও কি ওয়ান-ইলেভেন আমাদের মনে নেই? কে কাকে ভয় দেখায়। তিনি বিরাজনীতির ফায়সালা নিয়ে পত্রিকার রিপোর্ট করেছেন আমরা কি ভুলে গেছি?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্তর্জাতিক লিংক এদের অনেক শক্ত। তাই এ খবর ছড়িয়ে দিয়েছে যে দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির জন্য রিপোর্ট করায় এই পত্রিকার, এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য রিপোর্ট করার জন্য টকশোতে অংশ নেয়ার জন্য সরকার কি একজন লোকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে? তাহলে মিথ্যা সংবাদ আজকের সারা দুনিয়ায় রটানো হচ্ছে যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্যই রিপোর্ট করাতে এই সাংবাদিক এই সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ করে আমরা কি ভুল করে ফেললাম? প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, সেই ডিজিটাল মাধ্যমে এখন আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার হচ্ছে। তারা এ বিষয়টা অত্যন্ত চতুরভাবে করে যাচ্ছে।
এ যৌথসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খান, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।
এছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।