প্রস্তাবিত বাজেটে চলমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসার কোনও রূপরেখা নেই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের এই বাজেট মানুষের মধ্যে কোনো স্বস্তি আনতে পারবে না। এটা সাধারণ মানুষকে নিঃস্ব করার বাজেট।
আজ শুক্রবার, (০২ জুন) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের বিএসপিপি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা শেষে জিয়া পরিবারের সুস্থতা কামনায় দোয়া করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কাউকে ছোট করতে চাই না। সবাইকে সম্মান করতে চাই। আমরা তখনই কষ্ট পাই, দুঃখ হয়। একটা গোষ্ঠী যখন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে খলনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করে। কিন্তু ওই গোষ্ঠীরা জানে না জাতি তাকে হৃদয়ে ধারণ ও লালন করে রাখে।
জিয়াউর রহমান সমৃদ্ধি ও দেশ বিনির্মাণে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছিলেন জানিয়ে মহাসচিব বলেন, ওনার সেই চিন্তা থেকেই এমন ভাবনা এসেছে। সার্কের প্রতিষ্ঠাতা কে? সেই জিয়াউর রহমান। আজ তাকে দূরে ফেলে দিয়ে চায় তারা।
তিনি বলেন, ‘বাকশাল শাসন ব্যাবস্থা এ দেশের মানুষের পক্ষে ছিল না। এ দেশের মানুষ এ জন্য যুদ্ধ করেনি। গণতন্ত্র থাকবে না। অধিকার থাকবে না। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকবে না। সাংবাদিকদের স্বাধীনতা থাকবে না। এজন্য দেশের মানুষ যুদ্ধ করেনি।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে চলমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসার কোনও রূপরেখা নেই। সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছে যে, চমৎকার বাজেট হয়েছে। অথচ আজকে নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া বলছে যে, সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি নেই। নিত্যপণ্যের দামের যে ঊর্ধ্বগতি, চলমান যে সংকট… সেখান থেকে বেরিয়ে আসার কোনো রূপরেখা বাজেটে নেই। টাকা কোথা থেকে আসবে? কীভাবে আসবে সেটাও বলা নেই। এটাই হলো এই সরকারের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।
তিনি বলেন, এই বাজেট মানুষের মধ্যে কোনো স্বস্তি আনতে পারবে না। কিভাবে টাকা আসবে তার কোনো কিছু স্পষ্ট করেনি সরকার। এটা সাধারণ মানুষকে নিঃস্ব করার বাজেট। তারা মেগা প্রজেক্ট করে টাকা চুরি করবে এজন্যই। এটা বাস্তবতা বিবর্জিত একটা বাজেট। এরা সব কিছু বিলীন করে দিচ্ছে।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির মধ্যেও সরকারের এমন উচ্চবিলাসী বাজেটের প্রসঙ্গ এনে মির্জা ফখরুল বলেন, যারা ভিক্ষুক তাদেরকেও নাকি দুই হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। এভাবে মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়ে ক্ষমতাসীনরা মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে নিজেদের উন্নয়ন করবে। আজকে চাল-ডাল-তেল-লবণ ও পেঁয়াজের দাম এমনভাবে বেড়েছে যে, কঠিন অবস্থা। গরিব মানুষ বলছে, সামনে কোরবানি আমাদেরও তো সাধ হয় যে, গরুর গোশত রান্না করব। কিন্তু আদা কিনবে কোথা থেকে? সুতরাং এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে। সেজন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া দেশে কোনও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা তো বলিনি বিএনপিকে ক্ষমতা দাও। আমরা তো চেয়েছি একটা সুষ্ঠু ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। অনেক হয়েছে। এনাফ ইজ এনাফ। ভালোই ভালোই বিদায় নাও। নইলে কিভাবে বিদায় করতে হয়, তা এ দেশের মানুষ জানে।
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন প্রফেসর ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, প্রফেসর ড. বোরহান উদ্দিন খান, ডা: এ কে এম আজিজুল হক, ডা: সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল রহমান রিজু, অধ্যাপক সেলিম ভুঁইয়া, অধ্যাপক লতিফুর রহমান, ড. শামছুল আলম সিদ্দিকী, কৃষিবিদ প্রফেসর ড. গোলাম হাফিজ কিবরিয়া কেনেডি, বিএনপি স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।