আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর যমুনার সামনে আন্দোলন জোরালো হচ্ছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বে চলমান অবস্থান কর্মসূচিতে তৈরি হচ্ছে একটি মঞ্চ। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ শুক্রবার (৯ মে) সকালে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বাদ জুমার পর দলমত নির্বিশেষে সবাইকে রাজপথে নামার আহ্বান জানানো হয়েছে।
যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচির ১১ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আন্দোলনকারীরা তাদের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াননি। সকালে শতাধিক কর্মী বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বারবার স্লোগান দিচ্ছেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘এই আন্দোলন শুধু এনসিপির নয়, এটা দেশের সব ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির মিলিত অবস্থান। বাদ জুমা থেকে বৃহত্তর জনসমাগমের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করব, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে কেউ স্বস্তিতে থাকতে পারবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকেও কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বদলে এখন তাদের আবার সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার যদি সত্যিই পরিবর্তনের প্রতীক হয়, তাহলে এখনই আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশ্যে বলছি— আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।’
এ সময় তিনি সবাইকে বাদ জুমা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে উপস্থিত হওয়ার অনুরোধ জানান। বলেন, ‘এটা আমাদের শেষ দৃঢ় অবস্থান। এখানে যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে, তা নিষিদ্ধ ঘোষণার আগ পর্যন্ত চলবে।’
শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে বিক্ষোভে যোগ দেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। দলের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে তারা অংশ নেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, সরকারের দিক থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না এলে তারা অবস্থান কর্মসূচি আরও বিস্তৃত করবেন। যমুনার সামনে একের পর এক ব্যানার ও দলীয় পতাকা স্থাপন হচ্ছে, তৈরি হচ্ছে মঞ্চ। তারা বলছেন, এখান থেকেই শুরু হবে চূড়ান্ত আন্দোলনের নতুন ধাপ।
এই আন্দোলনে একত্রিত হয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারীসহ শীর্ষ নেতারা। সঙ্গে রয়েছেন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। তাদের ভাষায়, এই সংগ্রাম একক কোনো দলের নয়— এটি জনগণের সম্মিলিত আওয়াজ।