বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানকে কেন্দ্র করে। তার একটি সাম্প্রতিক বক্তব্য ‘উদ্ভট ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) পাঠানো হয়।
এই প্রেক্ষাপটে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি।
তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, ফজলুর রহমানকে শোকজ নয়, সম্মান জানিয়ে বিষয়টি সমাধান করা উচিত।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে গোলাম মাওলা রনি এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানান।
তিনি লিখেন, ফজলুর রহমান সাহস করে কিছু কথা বলেছেন। তিনি দলের এবং দেশের রাজনীতিকে যেসব অশ্লীল ও বিকৃত মানসিকতার প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে চেয়েছেন, সেটা কৌশলগত হলেও নৈতিক জায়গা থেকে সমর্থনযোগ্য।
রনি দাবি করেন, ফজলুর রহমানের বক্তব্যের ভাষা হয়তো বিতর্কিত হতে পারে, কিন্তু তিনি যে উদ্দেশ্যে তা বলেছেন, সেটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত ছিল। তিনি নেত্রী ও দলকে রক্ষা করতে চেয়েছেন, বলেন রনি।
তিনি আরও লিখেন, ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়িয়েছে, তাদের হাতে ভাষা, যুক্তি, বা রাজনৈতিক বোধ নেই। তারা তাকে বিএনপির শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে চেয়েছে, আওয়ামী লীগের দোসর বলেছে। এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে দলও সেই ফাঁদে পা দিয়েছে।
সাবেক এই এমপি বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক কৌশল নিয়েও কঠোর সমালোচনা করেন। বলেন, বিএনপি ভয়কে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করছে। লড়াই না করে সুবিধা ও সমঝোতার পথ খুঁজছে। শেখ হাসিনার ভয়ে পালিয়ে থাকা, রাজনৈতিকভাবে অদক্ষ কিছু মানুষ বিএনপি নেতাদের নিয়েই ভিডিও বানিয়ে অপমান করছে। আর এই ভিডিও দেখে বিএনপি হাইকমান্ড ভয় পেয়ে নেতাদের শোকজ করছে। এতে করে দলের ক্ষতি ছাড়া আর কিছু হচ্ছে না।
রনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এমন ধারায় চলতে থাকলে ‘আরেকটি নতুন জাতীয় পার্টির মতো বিভক্ত দল’ গড়ে উঠতে পারে।
অবশেষে তিনি বলেন, আমি মনে করি ফজলুর রহমানকে দেওয়া শোকজ প্রত্যাহার করা উচিত। বরং তদন্ত কমিটি গঠন করে তার বক্তব্যের প্রেক্ষাপট বোঝার চেষ্টা করা উচিত। তিনি যদি দলে উপযুক্ত না হন, তাহলে সম্মানের সঙ্গে তাকে অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে। অপমান নয়।