ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিডব্লিউবি সরকারি চালের মধ্যে ৮০০ কেজি চাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার (৩০ এপ্রিল) রাত ১০টার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের বাকপুরা গ্রামের গ্রাম পুলিশ দুলাল সর্দারের বাড়ি থেকে এ চাল জব্দ করা হয়।
অভিযানের সময় চাল ভর্তি একটি একতলা ভবন প্রশাসনের পক্ষ হতে সিলগালা করে রাখা হয়।
বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তর জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম করে আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কুদরত এ খুদা।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) এই প্রকল্পের নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নে ১৭১ জন সুবিধাভোগীর জন্য জন প্রতি ৩০ কেজি চাল উত্তোলন করেন নুরুল্লাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহীন আলম সাহাবুর।
সেই চালের মধ্যে থেকে সোমবার গভীর রাতে ৮০০ কেজি চাল তারই গ্রাম পুুলিশ দুলাল সর্দারকে দিয়ে সরিয়ে ফেলা হয়। গভীর রাতে গ্রাম পুলিশ দুলাল সর্দারের বাড়িতে ভ্যান থেকে চাল নামতে দেখে এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার নির্দেশে থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কর্মকর্তারা চাল জব্দ করেন।
মঙ্গলবার সকাল হতেই শত শত উৎসুক জনতা সরকারি চাল চুরির সময় ধরা পরার খবরে দুলাল সর্দারের বাড়িতে হাজির হয়।
এ সময় উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের স্থানীয়রা জানায়, মাঝে মধ্যেই এই বাড়িতে সরকারের বিভিন্ন ত্রাণ ভ্যান ভরে আসে আবার চলে যায়। এতদিন কেউ ভয়ে মুখ খোলেনি দুলাল সর্দারের বিরুদ্ধে। দুলাল সর্দার একজন গ্রাম পুলিশ ও তার ভাই হেলাল সর্দার একজন সরকারি কর্মকর্তার গাড়িচালক। একইসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুরের সম্পর্কে মামা।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত নুরুল্লাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহীন আলম সাহাবুর বলেন, গ্রাম পুলিশকে দিয়ে একটি এতিমখানায় জন্য ওই চাল আমি পাঠিয়েছি। পরদিন দিনের বেলায় ওই চাল এতিমখানায় দিয়ে দেওয়া হতো।
গ্রাম পুলিশ দুলাল সর্দার বলেন, চেয়ারম্যান তাকে ৮০০ কেজি চাল দিয়ে বলেছে স্থানীয় একটি এতিমখানায় দেওয়ার জন্য। আমি সেখানে রাতের বেলায় না দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসি দিনের বেলায় দেওয়ার জন্য।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কুদরত এ খুদা বলেন, সমগ্র বিষয়টির মধ্যে অপরাধ দৃশ্যমান রয়েছে। আমি তদন্ত টিম করে দিয়েছি। তাদের তদন্তের উপর ভিত্তি করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরাধী যেই হোক তাকে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।