গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র মো. ফারুক হাসানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় শহীদ মিনারে ফ্যাসিবাদ বিলোপ ও নতুন সংবিধানের দাবিতে ডাকা জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নাগরিক সমাবেশে বক্তব্যের পরই এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ফারুক হাসান ফেসবুক লাইভে এসে জানান ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তার ওপর হামলা চালিয়েছে।
ফারুক হাসান বলেন, ‘আজকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের একটি সমাবেশ ছিল। সেখানে আমাকে গেস্ট হিসেবে ডাকা হয়। আমি অতিথি হিসেবে সেখানে অংশগ্রহণ করি। সেখানে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা উপস্থিত ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সেখানে রাজনৈতিক বক্তব্য রেখেছি। আমি বলেছি, জুলাই আন্দোলনে বিপ্লব করেছি একটা বিপ্লবী সরকারের জন্য। আমরা অন্তর্বর্তী সরকার চাইনি। আমরা হাসিনার সংবিধান ছুড়ে ফেলে একটা বিপ্লব করেছি। এই বিপ্লবী সরকার না হওয়ার পেছনে তারাই দায়ী, যারা ৫ আগস্ট ক্যান্টনমেন্টে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের ফর্মূলা হয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকার চাইনি। আমরা চেয়েছি একটা বিপ্লবী সরকার। এই বিপ্লবী সরকার না হওয়ার কারণেই সারা বাংলাদেশে আজ বিশৃঙ্খলা সমস্যা ও সংকট তৈরি হচ্ছে। সেই জায়গায় এই বক্তব্য শতভাগ সঠিক।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা আমার বক্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালায়। আমার অবস্থা খারাপ করে দেয়। আমার মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে গেছে। আমাকে তারা চেনে যে, আমি গণঅধিকার পরিষদের নেতা। আমাদের বক্তব্য একবারেই পরিষ্কার। যারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের সন্ত্রাসী ছাড়া অন্য কিছু বলার সুযোগ নেই।’
ফারুক হাসানের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে এক ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ফারুক হাসানকে ১০-১৫ জন তরুণ এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তার পোশাক ধরে টানাটানি শুরু হয়। একপর্যায়ে তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় চেয়ার দিয়েও মারধরের ঘটনা ঘটে। হামলায় ফারুকের কপালের একটি অংশ কেটে রক্ত বের হয়। পরে পাশে থাকা কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হুইল চেয়ারে করে হাসপাতালে নেয়।
এদিকে, গণ অধিকার পরিষদের নেতা আবু হানিফ বলেন, ‘সরকারের সমালোচনা করায় শহিদ মিনারে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নেতাকর্মীরা ফারুক হাসানের ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। কপালে ছুরি দিয়ে জখম করেছে।’
এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে ফারুক ভাই চিনতে পারেন নাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক জাকির মজুমদার বলেন, ‘ফারুকের উপর হামলার সঙ্গে আমাদের সংগঠনের কেউ জড়িত নয়। অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সমালোচনা করেন ফারুক। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দরা ফারুকের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায়। এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত কয়েকজন ফারুকের উপর হামলা চালায়।’