সেপ্টেম্বরে ভারতীয় শিবিরে করোনার উপস্থিতিতে পিছিয়ে যাওয়া টেস্ট দুইদল খেলেছে প্রায় নয়মাস পর। এরমাঝে দুই দলেই এসেছে পরিবর্তন। তবে বড় পরিবর্তনটা এসেছে ইংলিশদের। ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে টেস্টের জন্য আলাদাভাবে কোচ করেছে, নতুন অধিনায়ক হয়েছেন স্টোকস। দুইয়ে মিলে ইংলিশদের খেলার ধরণই দিয়েছেন পালটে। পালটে যাওয়া সেই ইংল্যান্ডে এবার বধ হলো ভারত।
জো রুট ও জনি বেয়ারস্টোর জোড়া সেঞ্চুরিতে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলিং লাইনআপকে ধসিয়ে দিয়ে একপেশে আর অবিশ্বাস্য এক জয় পেল ইংল্যান্ড।
ইংল্যান্ড চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য ৩৭৮ রানের টার্গেট পায়। সেই রান অনায়াসে তাড়া করে এজবাস্টনের ১২০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ায় জয়ের রেকর্ড গড়েছে ম্যাককালাম শিষ্যরা।
চতুর্থ ইনিংসে ৩৭৮ রান তাড়া করে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন ছিল ইংলিশদের; কিন্তু কঠিন কাজটি সহজ করেছেন ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। ভারতের বিপক্ষে রীতিমতো ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংলিশরা।
এজবাস্টন টেস্টে ঋষভ পন্থ ও রবিন্দ্র জাদের জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৪১৬ রান করে ভারত। জবাবে জনি বেয়ারস্টোর সেঞ্চুরিতে ২৮৪ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড।
১৩২ রানে লিড পেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে চেতেশ্বর পুজারা ও ঋষভ পন্থের জোড়া ফিফটিতে ভারত জমা করে ২৪৫ রান। কিন্তু এরপরেই ইংল্যান্ড দেখালো তাদের শক্তি। ম্যাককালাম কোচ হয়ে আসার পরেই আক্রমণ করেই ম্যাচ জেতার চেষ্টা করেছে ইংল্যান্ড। কিউইদের বিপক্ষে ৩ টেস্টেই জয় এসেছে ৪ এর উপর রানরেটে। আর ভারতের বিপক্ষে সেটা প্রায় পাঁচ ছুঁইছুঁই!
৩৭৮ রানের বিশাল টার্গেট। হাতে মোটে ৪ সেশন। ৪র্থ দিন শেষ সেশন থেকে যেখানে উইকেটে টিকে থাকাই থাকে লক্ষ্য, সেখানে ইংলিশ ব্যাটাররা খেললেন অন্যরকম এক ইনিংস। বিধ্বংসী শুরু করেন স্বাগতিক ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার অ্যালেক্স লিস ও জ্যাক ক্রলি। উদ্বোধনী জুটিতে ১০৭ রান যোগ করেন তারা। টেস্ট ক্রিকেটে চতুর্থ ইনিংসের ওপেনিং জুটিতে এটাই দ্রুততম শতক।
২২তম ওভারে জুটি ভাঙতেই ছন্দপতন হয় ইংল্যান্ডের। দুই রানের ব্যবধানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। ৭৬ বলে ৪৬ রান করে জসপ্রিত বুমরাহর বলে বোল্ড হন জ্যাক ক্রলি। ৬৫ বলে ৫৬ রানে রানআউট হন লিস। দুই ওপেনারের মাঝে অলি পোপকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান বুমরাহ।
এই ধাক্কা অবশ্য ইংল্যান্ড সামলে ওঠে জো রুট ও জনি বেয়ারস্টোর ব্যাটে। চতুর্থ দিনে ১৫০ রানের জুটি গড়েন তারা। দিনশেষে ১১২ বলে ৭৬ রানে অপরাজিত থাকেন রুট। ৮৭ বলে ৭২ রানে অপরাজিত বেয়ারস্টো।
মঙ্গলবার পঞ্চম ও শেষ দিনে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১১৯ রান। আগের দিনে ৭৬ ও ৭২ রানে অপরাজিত থাকা রুট-বেয়ারস্টো এদিন সাবলীল ব্যাটিংয়ে জোড়া সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার মধ্য দিয়ে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।
এই জয়ে পাঁচ টেস্টের সিরিজে ২-২তে ড্র করে ইংল্যান্ড। শেষ টেস্টে দলের জয়ে ১৯টি চার আর ১টি ছক্কায় ১৪২ রান করে অপরাজিত থাকেন রুট। আর ১৫টি চার আর ১টি ছক্কায় ১১৪রান করে অপরাজিত থাকেন জনি বেয়ারস্টো।