দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে অবিলম্বে ‘বন্যাদুর্গত এলাকা’ ঘোষণা এবং ক্ষতিগ্রস্ত সব মানুষকে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
শনিবার ঢাকা উত্তর সিটি ইউনিটের অধীন ভাটরায় বিএনপির তিন ওয়ার্ডের কাউন্সিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, হাজার হাজার বন্যার্ত মানুষ যখন অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সরকার তখন পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে এত ব্যস্ত।
তিনি বলেন, ‘দেশে বন্যা চলছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ থেকে শুরু করে উত্তরের নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।’
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ফারাক্কা ব্যারেজের সব গেট খুলে দেয়ায় পদ্মা, মেঘনা, যমুনাসহ বড় নদীগুলোর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে অনেক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ‘বন্যার পানি ফসল, ঘরবাড়ি, গবাদিপশু এবং মানুষের মূল্যবান সম্পদ ধ্বংস করছে।’
তিনি বলেন,‘আমরা এই এলাকাগুলোকে অবিলম্বে বন্যাদুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার এবং কোনও বিলম্ব ছাড়াই এইসব এলাকার মানুষকে ত্রাণ সরবরাহ করার দাবি জানাই। এই দুঃসময়ে সরকার উৎসব নিয়ে ব্যস্ত। তারা পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে এতই ব্যস্ত যে জনগণের কল্যাণ ও জনদুর্ভোগের দিকে তাকানোর সময় নেই।’
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব হিসেবে দেশ বন্যার মুখে পড়ছে। ‘কিন্তু সেই বন্যা রোধ করা এবং ক্ষয়ক্ষতি কমানো সরকারের দায়িত্ব।’
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন নিয়ে সরকার ভারতের সঙ্গে চুক্তি করতে পারেনি বলে আক্ষেপ করেন বিএনপি নেতা।
তিনি আরও বলেন, সরকার অনেকদিন ধরেই তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করার কথা বলে আসছে, কিন্তু এখনো তা হয়নি।
ফখরুল বলেন, তারা (ভারত) যখন হঠাৎ করে ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খুলে দেয়, তখন পানির চাপ সামলানো সম্ভব হয় না। ‘সিলেট, সুনামগঞ্জসহ অন্যান্য অঞ্চল এখন এই সমস্যার সম্মুখীন। এটা এই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এবং জনগণের প্রতি অবহেলার প্রমাণ’।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বন্যা প্রতিরোধে বিভিন্ন হাওর ও অন্যান্য অঞ্চলে অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত অনেক বাঁধ, সেতু ও রাস্তা দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যা প্রতিরোধে এবং বন্যাপ্রবণ এলাকায় জনদুর্ভোগ কমাতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।