বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের ফ্যাসিস্ট সম্বোধন করা, স্বেচ্ছাচারীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় আইনের নির্দেশনা অমান্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সদস্যের অংশগ্রহণ ব্যতীতই অনলাইনে সিন্ডিকেট সভা সম্পন্ন করা, উপাচার্য বিরোধী ছাত্রবিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার।
এসময় ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসীন উদ্দীন, কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হকসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকবৃন্দ বলেন, উপাচার্য নিজে ছিলেন ফ্যাসিস্ট শক্তির একজন চিহ্নিত দোসর। ২০২৪ সালের আমি-ডামির নির্বাচনের পক্ষে দাঁড়িয়ে বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষক ও পেশাজীবীরা যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তাঁদের সেই বিবৃতিপত্রে ১০৮ নং স্বাক্ষরকারী ছিলেন। এমন চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে ফ্যাসিস্ট বলেছেন- এর চেয়ে লজ্জার ও ঘৃণার কিছু হতে পারে না। এই বক্তব্যের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর নিকট তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ড. মুহসীন বলেন, উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতা আমাদের সাধারণ কর্মকাণ্ডকে বিঘ্নিত করছে। তিনি আইন অমান্য করে সিন্ডিকেট সভাকে বিশেষ সভায় রূপান্তর করেছেন সিন্ডিকেট সদস্যদের মতামত ছাড়াই। এছাড়াও সহ-উপাচার্যের নিয়োগের সাড়ে তিন মাস পার হয়ে গেলেও তাকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি এবং অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে সহ-উপাচার্যের মতামতকে উপেক্ষা করে চলেছেন। এরকম অনেক স্বেচ্ছাচারিতার উদাহরণ রয়েছে।
কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, আমরা চাই আইনের শাসন। উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ট্রেজারার সংবিধি অনুযায়ী চলবেন। তারা কেউ আইনের অপব্যাখ্যা করে স্বেচ্ছাচারিতার পথে চলবেন, সেটা আমরা শিক্ষকসমাজ মানবো না।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা ছাত্রদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে সংহতি জানান এবং স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য উপাচার্যের প্রতি জোর দাবি জানান। দাবি উপেক্ষা করা হলে শিক্ষক সমাজ কঠিনতর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে বলে জানান তারা।