বরিশালে পুলিশি হেফাজতে ৩ নারীকে নির্যাতনের অভিযোগে ৩ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বাবুগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে। বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন-বাবুগঞ্জ থানার এএস আই নাসির উদ্দিন, সেকেন্ড অফিসার এসআই মো. খলিলুর রহমান ও পুলিশ কনস্টেবল নিপা রানী বৈদ্য। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ হেফাজতে ৩ নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত শনিবার রাতে এ মামলা করা হলেও, গতকাল রোববার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় ওসি মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ১২ মার্চ বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ আদালতের বিচারক আটকের পর ৩ নারীকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা করার আদেশ দেন। তবে জেলা পুলিশ সুপার দাবি করেন, ১৭ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ আদালতের কোনো আদেশ পায়নি।
মামলা প্রসঙ্গে বাবুগঞ্জ থানার ওসি মাহবুবুর জানান, আদালতের আদেশে এই মামলা করা হয়েছে। তবে মামলার বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
এদিকে, মামলার পরও অভিযুক্ত ৩ পুলিশ সদস্য রোববার রাত পৌনে ১০টায় থানায় কর্তব্য পালন করছেন বলে জানিয়েছেন বাবুগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার।
গত ৩ মার্চ বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ দেহেরগতি গ্রামে রানীর স্কুল সংলগ্ন এলাকায় রাতে লাউডস্পিকার বাজানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ আকাশি বেগম, রাশিদা বেগম ও মালা বেগমসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।
পরে ১২ মার্চ আকাশি বেগম, রাশিদা ও মালা বেগমকে আদালতে হাজির করা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহফুজুর রহমানের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তারা মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
থানা হেফাজতে বাবুগঞ্জ থানার নারী পুলিশ সদস্য নিপা রানী, সেকেন্ড অফিসার ও এএসআই নাসিরসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
পরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ আদালতের (বাবুগঞ্জ আমলি আদালত) বিচারক মো. নুরুল আমিন সেদিনই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি মামলা দায়েরের আদেশ দেন।
আদেশে সংযুক্ত একটি প্রতিবেদনে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বক্তব্য পর্যালোচনা করে উল্লেখ করা হয়েছে, আকাশি বেগম, রাশিদা বেগম ও মালা বেগমের হাত-মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে।