কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী আহমেদ হুসেন বাংলাদেশ ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিদেশি সহায়তা প্রকল্পে ২৭ কোটি ২১ লাখ ডলারের নতুন তহবিল ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের এবং বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জনগণের সঙ্গে জনগণের যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে- তা জোরদার করে চলেছে কানাডা।
আহোমেদ হুসেন বলেন, ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার মাধ্যমে আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করছি।
বাংলাদেশসহ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যান্য দেশে ১৪টি প্রকল্পে নতুন তহবিল অর্থায়ন করা হবে। এসব প্রকল্পে কানাডার পাশাপাশি অন্য বিদেশি অংশীদার ও দাতারাও অর্থায়ন করছে।
গ্লোবাল নিউজ লিখেছে, বিদেশি উন্নয়ন সহয়তার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের তুলনায় ফেডারেল লিবারেল সরকারের এই পদক্ষেপ একেবারেই ভিন্ন। ট্রাম্প ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) মাধ্যমে বিদেশি অর্থায়ন স্থগিত করে দিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং দেশটির সরকারি দক্ষতা বিভাগের সহ-প্রধান, ধনকুবের ইলন মাস্ক ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ৯০ দিনের জন্য বিদেশি সহায়তা স্থগিত করেন। তারা বিশ্বজুড়ে সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি হাজার হাজার সরকারি কর্মীকে ছুটি দেন।
ট্রাম্প এবং তার সরকারের লোকজন বিদেশি সহায়তা কর্মসূচিকে করদাতাদের অর্থের অপচয় হিসেবে দেখেন এবং দাবি করেন, তারা উদার রাজনৈতিক কার্যক্রমকে সমর্থন করেন। তবে তাদের সমালোচকদের ভাষ্য, এ ধরনের ব্যয় বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে শক্তিশালী করে এবং অন্যান্য দেশের বিদেশি হস্তক্ষেপ মোকাবেলা করে।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি ত্রাণকর্মী ও সমর্থকরা। তারা বলছেন, কংগ্রেস অনুমোদিত তহবিল ব্যবস্থাপনাকারী একটি ফেডারেল এজেন্সিকে ভেঙে দিয়ে প্রেসিডেন্ট তার আইনি ও সাংবিধানিক এখতিয়ারের সীমা অতিক্রম করেছেন।
গ্লোবাল নিউজ লিখেছে, কানাডা যেসব প্রকল্পে সহায়তা দিচ্ছে, সেসবে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে। এসব প্রকল্পের বিষয়বস্তু হচ্ছে লিঙ্গ সমতা, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং নারী ও মেয়েদের অধিকার।
অন্যান্য প্রকল্পে জলবায়ু পরিবর্তনকে মাথায় রাখা হয়েছে, যাতে লোকজন বৈরী পরিবেশে খাপ খাইয়ে চলতে পারে এবং দারিদ্র মোকাবেলা করতে পারে।
একটি প্রকল্পকে ‘নার্সিং খাতে নারীর ক্ষমতায়ন’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এর মধ্যে কানাডিয়ান কোম্পানি কোওয়াটার ইন্টারন্যাশনালের তিন বছরে ৬.৩ মিলিয়ন ডলার তহবিল বৃদ্ধির বিষয় রয়েছে।
লিবারেল সরকার নতুন নেতাকে সঙ্গে নিয়ে বসন্তকালীন নির্বাচন ডাকতে পারে। তার কয়েক সপ্তাহ আগে মন্ত্রী আহমেদ হুসেন এবং ব্রিটিশ কলম্বিয়ার লিবারেল এমপি পার্ম বেইনস ভ্যাঙ্কুভারে বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতাদের উপস্থিতিতে একটি অনুষ্ঠানে কানাডা সরকারের ওই সহায়তার ঘোষণা দেন।
ফেডারেল সরকারের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশি-কানাডিয়ান কমিউনিটির সদস্য সংখ্যা এখন লক্ষাধিক।