কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্ত এলাকায় নির্দিষ্ট সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে নারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিএসএফ। গত রোববার বিকেলে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলারকুটি সীমান্তের আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ৯৩১-এর পাশে এ ঘটনা ঘটে।
বিএসএফের গুলিতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও এক বাংলাদেশির ঘরের চাল ফুটো হয়ে যায় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
আচমকা বিএসএফের হামলার খবর পেয়ে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবির গোরকমন্ডল ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার নজরুল ইসলামসহ একটি টিম ওইদিন রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গুলিটি উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরদিন সোমবার সকালে কড়া প্রতিবাদ জানায় বিজিবি।
পরে ওইদিন সন্ধ্যায় ওই সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কোম্পানি পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়।
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, কেটে নেওয়া ধান গাছের আড়া (গোড়ায় অবশিষ্ট খড়) সংগ্রহে গত রোববার নোম্যান্সল্যান্ডের জমিতে যান সীমান্ত এলাকার কয়েকজন নারী। এ সময় ভারতের নারায়নগঞ্জ ক্যাম্পের টহলরত এক বিএসএফ সদস্য তাদের ধাওয়া করে।
এতে ওই নারীরা দৌড়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করলে ওই বিএসএফ সদস্যও তাদের পিছু নিয়ে বাংলাদেশের প্রায় ২০ থেকে ৩০ গজ ভেতরে ঢুকে পড়ে। এক পর্যায়ে রাইফেল উঁচিয়ে ওই নারীদের লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি ছুড়ে আবার ভারতের ফিরে যায় বিএসএফ সদস্য।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, গুলিতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও তা ধুলারকুটি গ্রামের বাসিন্দা নুর আলম বাচ্চুর বাড়ির রান্নাঘরের চালে আঘাত করে। সে সময় রান্নাঘরে বাচ্চুর পুত্রবধূ শাকিলা আক্তার ইতি থাকলেও তিনি বেঁচে যান।
নুর আলম বাচ্চু জানান, ওই সময় আমার পুত্রবধূ রান্নাঘরেই ছিল। ভাগ্যিস গুলিটা তাকে লাগেনি। মাঝে মধ্যেই বিএসএফ এভাবে বাংলাদেশে ঢুকে গ্রামবাসীর ওপর অত্যাচার চালায়। আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আসিফ জানান, এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় ওই সীমান্তে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সীমান্তে বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষণের কারণ জানতে চেয়ে বিজিবি কড়া প্রতিবাদ জানায়। জবাবে সীমান্তের সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করার আশ্বাস দেয় বিএসএফ।