বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি ভারত কোনো পদক্ষেপ নেয়, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এক কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। মূলত শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভারতের কূটনৈতিক বার্তা–সংক্রান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মির্জা ফখরুল ওই কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা পত্রিকায় দেখলাম আজকে ডয়েচে ভেলের বরাত দিয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট করা হয়েছে…এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি ভারত কোনো পদক্ষেপ নেয়, সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা মনে করি, সেটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য এবং এই অঞ্চলের মানুষের জন্য শুভ হবে না।
আজকে বাংলাদেশে যে সংকট, সেই সংকটের মূলে হচ্ছে এই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একদলীয় শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, সেই লক্ষ্যে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের মানুষের ওপরে যে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে রাষ্ট্রকে দিয়ে, বলা যেতে পারে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস গড়ে তুলে ‘টোটালি একটা ডিপ স্টেট’ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশ যারা গণতন্ত্রের কথা বলে সব সময়, তাদের কাছে এটা অপ্রত্যাশিত; যদি এই নিউজ সত্যি হয়ে থাকে।
মির্জা ফখরুল এ সময় আশা ব্যক্ত করে বলেছেন যে বাংলাদেশের মানুষের যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষাকে ভারত মর্যাদা দেবে। এই দেশে সত্যিকার অর্থেই সব দলের অংশগ্রহণে, সবার সদিচ্ছায় একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের ব্যাপারে তারা পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই কথা আমরা কখনোই বলতাম না। বলতে বাধ্য হচ্ছি যে আমরা দেখতে পারছি, যদি নিউজটা সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তারা হস্তক্ষেপ করছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এ কথা খুব স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, কোনো মৌলবাদী দল এখানে ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। এ দেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে দেখা গেছে, কখনোই কোনো মৌলবাদী দল ক্ষমতায় আসতে পারেনি। বরং তাদের যে শক্তি, সেই শক্তি ক্ষীয়মাণ হয়ে এসেছে।
এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করেছে। এখন বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করে তারা একটা রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এ দেশের জনগণ আজকে এক হয়েছে, সব দল এক হয়েছে তাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। এই এক দফার লড়াইয়ে নিশ্চয় জনগণ জয়ী হবে।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতাদের নিয়ে মির্জা ফখরুল আজ সকালে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় তাঁর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয় সম্পাদক মীর সরাফত আলী ও সহসম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়াসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।