মো.মাসুম ইসলাম, বাঘা(রাজশাহী)প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় পূর্ব শত্রুতার জের ও প্রশাসনের সোর্স এমন সন্দেহ করে দূর্জয় নামের এক যুবককে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে আহত করেছে স্থানীয় মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (১১ আগষ্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টায় উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের আলাইপুর নাপিতপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত যুবকের নাম দূর্জয় তিনি মৃত দুলাল হোসেনের ছেলে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, এই যুবককে তার নিজ বাড়ির জানালা দরজা ভেঙে জোর পূর্বক ঘরে ঢুকে হাতুড়ী ও হাসুয়া দিয়ে পিটুনি দিয়ে আহত করা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, এলাকায় মেরাজ চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দূর্জয়কে বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল মাদক কারবারিরা। গত ১০ দিন আগে সিদ্দিক ও চপলের ভারত থেকে আসা মাদকের (ফেন্সিডিল) একটি চালান আটক করে প্রশাসন।
এ নিয়ে মাদক কারবারিরা ধারণা করছে সিদ্দিকের চাচাতো ভাই টিপু ও দূর্জয় এই মাদকের চালান নিয়ে প্রশাসনকে তথ্য দিয়েছে। সিদ্দিক ও টিপুর মধ্যে এ ইস্যুতে ঝামেলাও চলছিলো। আজ সকালে স্থানীয় সামেদের ছেলে সিদ্দিক, খামেদের ছেলে চপল, মহসিনের ছেলে বারু, সিরাজুলের ছেলে সোহাগ ও কাজল, জামালের ছেলে সাহারুল, রাজ্জাকের ছেলে সবুজ ও সামেদের ছেলে সাদ্দামসহ বেশ কয়েক জন দূর্জয় এর বাড়ির ঘর দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
এসময় দূর্জয়ের পা হাসুয়া (দা সদৃশ ধারালো অস্ত্র) দিয়ে কেটে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং তাদের হাতুড়ির আঘাতে দূর্জয়ের মাথা ফেটে ও কান দিয়ে রক্ত ঝোড়া অবস্থায় মাটিতে লুটে পড়ে। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে দূর্জয়।
বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাকছুদুল হক জানান, মাথায় আঘাতের কারণে তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ডান কানও আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সিদ্দিকের মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলা তা বন্ধ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় ব্যক্তি জানায়, সিদ্দিক, চপল,বারু এরা সবাই মাদক অস্ত্রসহ অবৈধ ব্যবসা করে প্রচুর টাকার মালিক হয়েছে। তাদের দৌরাত্ম্যে মাদকের প্রভাব বাড়ছে। এদের আটক করলেই আলাইপুর এলাকায় ৯০% মাদক কমে যাবে।
আহত দূর্জয় জানায়, বেশ কিছুদিন আগে মেরাজ চেয়ারম্যানের বাড়িতে ভাঙচুর হয়। সেই ঘটনায় আমাকে সন্দেহ করে বিভিন্ন সময় ভয় দেখাতো তারা। ১০ দিন আগে সিদ্দিকের ফেন্সিডিল ধরে প্রশাসন। এ বিষয় আমাকে প্রশাসনের সোর্স সন্দেহ করে। এছাড়াও তিন দিন আগে আমার মোটরসাইকেল গাড়ি চেয়েছিল, কিন্তু আমি তাদের গাড়ি দেইনি।
আহত যুবক বলেন, আমি মাঠে ফুটবল খেলা দেখতে গেলে তারা আমাকে মারধর করে। আমার বাবা নেই, মারা গেছে কয়েক বছর আগে। আমি অসহায় ও তাদের থেকে দুর্বল হওয়াতে বিষয় টি নিয়ে কিছুই করতে পারিনি।
ঘটনার জন্য শাস্তি দাবি করে এই যুবক বলেন, হঠাৎ আজ দুপুরে সিদ্দিক, চপল, বারু, সোহাগ, সাহারুল, কাজল, সবুজ ও সাদ্দাম সহ ৮/১০ জন আমার বাড়ি ঘর দরজা ভেঙে আমার নিজের বাড়ীতেই আমাকে হাসুয়া,হাতুড়ী দিয়ে মারধোর করে এই অবস্থা করেছে। আমি তাদের শাস্তি চাই।
এ ঘটনায় মামলা প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে৷