নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সেন্ট্রাল ওরিয়েন্টেশনে প্রবেশ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় বান্ধবীসহ প্রবেশে বাধা দেওয়ায় ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে রোভার স্কাউট সদস্যকে ক্যাম্পাস ত্যাগের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শরীফুল ইসলাম। ভুক্তভোগী রোভার স্কাউটসের রোভারমেট মাহামুদুল হাসান সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাহামুদুল হাসান বলেন, “ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম চলাকালীন শরীফুল ইসলাম তার বান্ধবীকে নিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে বাধা দিই।
এ সময় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হুমকি দেন এবং বলেন, ‘তোমরা পারলে আমার কিছু কর’। পরবর্তীতে তিনি জোরপূর্বক ভেতরে প্রবেশ করেন। এমনকি নির্ধারিত আসনের পরিবর্তে মেয়েদের আসনে বসেন। পরে বিএনসিসি ও স্কাউট সদস্যদের অনুরোধে তিনি ছেলেদের আসনে বসতে বাধ্য হন।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “প্রক্টর, বিএনসিসি, স্কাউট ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনেই শরীফুল আমাকে তুই সম্বোধন করে অসম্মানজনক আচরণ করেন এবং রোভার স্কাউট সদস্যদের ক্যাম্পাস ছাড়ার হুমকি দেন।”
অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা শরীফুল ইসলাত বলেন, “আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। আমি কোথাও ছাত্রদল পরিচয় ব্যবহার করিনি। অথচ সংবাদে আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্রদল নেতা হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনার সময় আমি অডিটোরিয়ামের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে কয়েকজন আমাকে ডেকে অডিটোরিয়ামের পিছনে নিয়ে যায়। সেখানে কিছু ছাত্রলীগ নেতাকে দেখতে পাই। তারা অকারণে তুই-তোকারি শুরু করে এবং আমাকে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে আমার ওপর মব জাস্টিস তৈরি করারও চেষ্টা করা হয়।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “ঘটনার গুরুতর পরিস্থিতিতে প্রক্টর স্যার আমার নিরাপত্তার স্বার্থে আমাকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরামর্শ দেন। তাই আমি সেখান থেকে চলে আসি।”
অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি—অডিটোরিয়ামের পিছনে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হোক আসলে কী ঘটেছিল এবং কোন কোন ছাত্রলীগ নেতা সেখানে উপস্থিত ছিল তা প্রকাশ করা হোক।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন, “নবীনবরণ অনুষ্ঠানের শেষ মুহূর্তে স্কাউট ও বিএনসিসি সদস্যদের সঙ্গে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব ছাত্র উপদেষ্টা ও বায়ো ফ্যাকাল্টির সহকারী প্রক্টর নাহিদ সুলতানাকে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় নিরপেক্ষভাবে সমাধান করা হবে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব নয়, তবে দ্রুতই বিষয়টির সমাধান করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবদ্ধ সংগঠন। এখানে কোনো পক্ষপাত করা হবে না।”