‘বাবার চাকরি ফিরিয়ে দিন, ভয় আতঙ্ক আমাদের গ্রাস করছে!’ ব্যস্ত রাস্তার পাশে এমন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে বাবার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানান প্রতিবন্ধী কিশোরী শারমিন হক। পারিবারিক বিরোধের জেরে করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত হন শারমিনের পিতা মাইনুল হক।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে এমন আকুতি জানান শারমিন। নিজের ফুফার দায়ের করা মামলায় তার ব্যাংকার বাবা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শারমিনের বাবা মাইনুল হক ময়মনসিংহের তারাকান্দা শাখা সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পারিবারিক বিরোধের জেরে ভগ্নিপতি আবু ছিদ্দিক খানের দায়ের করা মামলায় প্রায় এক বছর ধরে সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন অফিসার মাইনুল। তাই বাবার চাকরি ফেরত চেয়ে তার একমাত্র প্রতিবন্ধী মেয়ে শারমিন ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রোববার বেলা ১১টা থেকে তার প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু হয়ে চলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। বাবার জন্য মেয়ের এমন আকুতি দেখে জড়ো হয় আশপাশের মানুষ।
শারমিন হক বলেন, গত এক বছর ধরে বাবা-মা মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। তা দেখে নিজেও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছি। আমাদের হাসি-খুশি সংসারটা ফুফার করা মিথ্যা মামলায় এলোমেলো হয়ে গেছে। আমার দাবি সরকারসহ সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে বাবার চাকরিটি ফিরিয়ে দেবে। আমি আমার বাবা-মাকে সুখি দেখতে চাই।
শারমিন হকের মা নাসরিন হক নূপুর বলেন, আমার স্বামী মাইনুল হক তার পৈত্তিক সম্পত্তি থেকে ছয়টি ফ্ল্যাট পান। আমরা সেই ফ্ল্যাটের কাজ কেন সম্পন্ন করেছি এনিয়ে বিরোধে আমার স্বামীর ভগ্নিপতি ফৌজদারী মামলা করে। এতে ব্যাংক আমার স্বামীকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর থেকে তারা (স্বামীর ভগ্নিপতি) বিভিন্নভাবে হুমকিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে নিয়েও নানা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। নিজেকে রক্ষা করতে তাদের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আমি বাদী হয়ে মামলাও করি।
এবিষয়ে মাইনুল হক বলেন, পারিবারিক বিরোধের জেরে ২০২২ সালের ২৩ মে মিথ্যা মামলা দিয়ে ভগ্নিপতি আবু ছিদ্দিক খান সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগের মাধ্যমে আমাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করান। মামলা যে সময়টা উল্লেখ করা হয়েছে সে সময়ে আমি অফিসে ছিলাম। তা সিসিটিভি ফুটেজসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও ভালো করে জানেন।
তিনি আরও বলেন, এখন নিজের বাসা ছেড়ে প্রতিবন্ধী মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র বাসা ভাড়া করে থাকছি। এখন শুধু ভাতা পাচ্ছি। আশা করছি আদালতে সত্যের জয় হবে। আমি আমার চাকরিটাও ফেরত পাব। তবে সামাজিকভাবে অনেকটা হেয় হয়েছি।