আবদুল্লাহ আল আলীম,দেবিদ্বার প্রতিনিধি:কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর এলাকায় বাবার সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ভাইয়ের ছুরির আঘাতে খুন হয়েছেন আরেক ভাই মো.জাহাঙ্গীর আলম।
বৃহস্পতিবার(২৩ জুন) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের সময় উপজেলার উত্তর ভিংলাবাড়ির হাশেম ব্যাপারী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ভাই মো.জাহাঙ্গীর আলম কোম্পানীগঞ্জ সাফল্য সমবায় সমিতি নামে একটি এনজিওতে চাকরি করতেন এবং উত্তর ভিংলাবাড়ি এলাকার মৃত আবুল হাশেম ব্যাপারীর ছেলে।এ ঘটনার পর থেকে বড় ভাই আলমগীর হোসেন পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনা নিয়ে জানান, নিহত জাহাঙ্গীর আলমের বাবা আবুল হাশেম ব্যাপারী কোম্পানীগঞ্জ বাজারে পেয়াজের ব্যবসা করতেন। তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় পাশ্ববর্তী ব্যবসায়ী আবদুর রহিম নামে এক ব্যক্তির কাছে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা পাওনা ছিলেন। গত ৮ মাস আগে আবুল হাশেম ব্যাপারী মারা যাওয়ার পূর্বে পাওনা সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা দুই ভাইয়ের মধ্যে সমান ভাবে ভাগ করে পরিশোধ করতে বলে যান আবদুর রহিমকে ওই সময়ে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধ করবেন বলেও আবদুর রহিম সবাইকে আশ্বাস দেন। পরে বড় ভাই আলমগীর হোসেন টাকা পরিশোধের নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে গত সপ্তাহে দেনাদার আবদুর রহিমের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা অগ্রীম নিয়ে আসেন।
এ খবর পেয়ে ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলম বড় ভাই আলমগীর হোসেনের কাছ পাওনা আদায়ের ৫০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। সেই ২০ হাজার টাকা নিয়ে গত দুইদিন ধরে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে কথা কাটাকাটি ও তর্ক চলছিলো।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দুপুরে বড় ভাইয়ের কাছে ফের ২০হাজার টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করেন করেন ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলম। আলমগীর হোসেন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বড় ভাই আলমগীর হোসেন ঘর থেকে ছুরি এনে ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলমের পেটের নিছে বাঁ পাশে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।এতে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম মারা যান। পরে প্রতিবেশীরা দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছে, ঘাতক বড় ভাই আলমগীর উউচ্ছৃঙ্খল স্বভাবের, সে এলাকার কাউকে পরোয়া করে না। এ কারণে এলাকার কেউ তাকে পছন্দ করে না। সে এর আগেও বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। অপরদিকে নিহত জাহাঙ্গীর দুইদিন পর সিলেটের চলমান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সে আর যেতে পারল না।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, ‘ঘটনাটি প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটেছে। খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার পর থেকে ঘাতক আলমগীর হোসেন পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’