আমাদেরকে সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। তাদের (বিএনপি) দুরভিসন্ধি আছে। সাম্প্রদায়িকতাসহ তাদের অশুভ খেলার পরিকল্পনা আছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সুতরাং আমাদের সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকতে হবে।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ফারুক খান, খায়রুজ্জামান লিটন, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফাজাল হোসেন, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, কার্যনির্বাহী সদস্য ও তারানা হালিম।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমাদের বিদেশি বন্ধুদের কাছে আমাদেরকে অপমান করেছে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য যদি জীবন দিতে হয়, তারপরেও আমরা পথ ছাড়বো না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শান্তি সমাবেশ করে দেখিয়ে দেবো, আমরা অশান্তির বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা নির্বাচন চাই শান্তিপূর্ণ। কাজেই অশান্তি আমরা করতে চাই না। অশান্তি কারা চায়? যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, যারা দেশের নির্বাচনকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে ফ্রি-ফেয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিক সেই সময় যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চান না, যারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় যারা নিয়ে যেতে চায়, তারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।
তিনি বলেন, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে স্থায়ী করেছিলাম। আর বিএনপি তা বিতর্কিত করেছে। ২০০১ সালে এবং ২০০৬ সালে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বিতর্কিত করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধানকে কচুকাটা করেছে বিএনপি। আমরা যা অর্জন করেছিম তাকে অবমাননা করা, ছোট করা, খাটো করা, পক্ষান্তরে আমাদের দেশকে ছোট করা- যে কাজটি বিএনপি করতে চেয়েছে। তাদেরকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অপচেষ্টার বিরুদ্ধে যে চ্যালেঞ্জ তারা নিচ্ছে, আমাদের তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। দেশ স্বাধীনতার আদর্শ অনুযায়ী চলবে নাকি ‘৪৭-এর দ্বিজাতি তত্ত্বের মাধ্যমে চলবে?
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের কার্যকলাপ, তাদের মুখের ভাষা, প্রধানমন্ত্রীকে কবরস্থানে পাঠানোর ঘোষণা দেয় তারা, যে দল ‘৭৫-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার- শ্লোগান দেয়, তারা কখনও দেশের উন্নয়ন চাইতে পারে না। তাই এই অপশক্তিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া যাবে না। এই অপশক্তিকে চিরতরে অবসান করতে হবে। এ জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হবে, রাজপথে থাকতে হবে।
নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো ভয় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু মানুষ তাদের ভয় পাচ্ছে। কারণ তারা হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। মানুষ তাই মনে করছে, আবার ‘১৪ সালের মতো তারা (বিএনপি নেতাকর্মী) নাশকতা করবে কিনা। সেজন্য আমরা বলতে চাই, আওয়ামী লীগ নেতারা বেঁচে থাকতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিসর্জন দিতে দেবো না।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে অনির্বাচিতদের হাতে কোনোভাবেই ক্ষমতা ছেড়ে দিতে পারি না আমরা। তাই তাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিজ্ঞা, আমরা তাদেরকে প্রতিহত করবো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা কখন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন? বড় বড় কথা বলবেন না। তালিকাটা তৈরি করেন। তারা ডাহা মিথ্যা কথা সাজাচ্ছে। মির্জা ফখরুল আজকে ডাহা মিথ্যাচার করেছে, তিনি বলেছেন, বিএনপিকে নাকি মঞ্চ তৈরি করতে দেওয়া হয় না। আপনারা আসেন, দেখে যান।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনারা সবাই নিজে নিজের দায়িত্ব নেবেন। এ যুদ্ধ আমাদের সবার। এটা আমাদের বাংলাদেশের আরেক মুক্তিযুদ্ধ। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী আমরা করতে পারবো। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি।