বিএনপি নির্বাচনে ভয় পায় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে বিএনপি নির্বাচনে আসতে ভয় পাচ্ছে। তারপর থেকে কোনো নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করছে না। তারা নির্বাচনে ভিতু।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আমির হোসেন আমু বলেন, নির্বাচনে তোমরা আসবা না, আমাদের বিরুদ্ধে অনেক জায়গায় অনেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল, তোমরা করো নাই। তোমরা নির্বাচনকে ভয় পাও।
তিনি বলেন, নির্বাচন দিয়ে জিয়াউর রহমানও কোনো দিন ক্ষমতায় আসেননি, তোমরাও আসতে পারবা না। তার জন্যই নির্বাচন নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র। অনির্বাচিত সরকার দিয়ে এ দেশকে আবার পেছনের দিকে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। যেটা হতে দেওয়া যাবে না।
আমু বলেন, আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার, সংবিধানের ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। সংবিধানের ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য সবার প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান, সবাই যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।
তিনি আরও বলেন, কোনো দিন জনস্রোতের বিরুদ্ধে কারচুপি করা যায় না। এটা নির্বাচনের ইতিহাস। যত বড় সমর্থক হোক প্রশাসন কোনো দিন জনস্রোতের বিরুদ্ধে যায় না। আজকে এলাকাভিত্তিক জনসমর্থন থাকলে প্রশাসনও সাহায্য করতে বাধ্য হয়। এটা নিয়ম।
নির্বাচন না করে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, নৈরাজ্য পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করে সংবিধানকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টা করা, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা করা চলতে দেওয়া যায় না জানিয়ে তিনি বলেন, তোমাদের পায়ের নিচে যদি মাটি থাকে, জনসমর্থন থাকে, নির্বাচনে এসে প্রমাণ করো। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় এ দেশের মানুষ কোন সরকার চায়। আজ শুধু দলীয় ঐক্য নয়, জনগণের ঐক্য হচ্ছে মূল ঐক্য।
সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপি সুযোগ পেলেই রাজাকারের পক্ষে কথা বলে, জামায়াতের পক্ষে, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে কথা বলে ও সমর্থন করে। বিএনপি ১৫ আগস্টের হত্যার নিন্দা জানিয়ে একটাও বিবৃতি দেয়নি। তারা এই শোকের মাসে একটা সভাও করবে না। আসলে তারা খুনিদের সমর্থক। তাই বিএনপির ক্ষমতা মানে খুনি, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতা। বিএনপির ক্ষমতা মানে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের দিকে ঠেলে দেওয়ার ক্ষমতা।
সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আরেকটি যুদ্ধে আমাদের ঝাপিয়ে পড়তে হবে, এটাই হোক আজকের শপথ।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব আপনারা যদি এবার নির্বাচনে না আসেন, তাহলে ৫০ বছর পিছিয়ে যাবেন। আপনারা মুসলিম লীগ হয়ে যাবেন। হারিকেন দিয়েও আপনাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।
গণতন্ত্র পার্টির সভাপতি ডা. শাহাদত হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান খান, বাসদের রেজাউর রশিদ, গণ আজাদী লীগের এসকে শিকদার প্রমুখ।