বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের নেত্রী নূসরাত জাহান। ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিবৃতির মাধ্যমে তিনি এই প্রতিবাদ জানান। নূসরাত কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সোমবার (৬ জুলাই) নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে ‘ফজলুর রহমানের বক্তব্যটি তার কাছে ছাত্রদলের চেতনার পরিপন্থী মনে হয়েছে বলে নিজে ফেইসবুকে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি’ শিরোনামে একটি বিবৃতি দেন তিনি।
বিবৃতিতে নূসরাত জাহান লেখেন, “সম্প্রতি এই জেলারই সন্তান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং জ্যেষ্ঠ নেতা ফজলুর রহমান বলেছেন— হাসিনা খারাপ, আওয়ামী লীগ খারাপ না। এই বক্তব্য আমাদের কাছে বিভ্রান্তিকর এবং ইতিহাস ও বাস্তবতার পরিপন্থী মনে হয়েছে।
যে আওয়ামী লীগ ১/১১ থেকে শুরু করে গণতন্ত্র হত্যার সব অপকর্মের নেতৃত্বে ছিল, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে একযোগে নিঃশেষ করতে চেয়েছিল, সেই দলের দায়ভার একজন ব্যক্তির ওপর চাপানো রাজনৈতিক অপচেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।”
তিনি আরও লেখেন, “আমি কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে এই বক্তব্যকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। এটি বিএনপির লক্ষ লক্ষ কর্মী-সমর্থকের অনুভূতির প্রতি অপমানজনক। আমরা ব্যক্তি নয়, আদর্শ ও রাজনীতির চেতনায় বিশ্বাসী। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলনে আমরা ছিলাম, আছি, থাকব।”
বিবৃতির নিচে তিনি নিজের সাংগঠনিক পরিচয়ও উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রয়াত গণফোরাম নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসিন মন্টুর স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। সেখানেই তিনি “হাসিনা খারাপ, আওয়ামী লীগ খারাপ না” বলে মন্তব্য করেন। একই বক্তৃতায় তিনি ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগেরও সমালোচনা করেন।
নূসরাত জাহানের ফেসবুক পোস্টটি ইতোমধ্যেই কিশোরগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে ফজলুর রহমান বলেন, “সমালোচনা করার তার অধিকার আছে। আমি তো হাসিনার পক্ষে কিছু বলিনি।” এরপরই তিনি মোবাইল সংযোগটি কেটে দেন।
অন্যদিকে, নূসরাত জাহানের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, নূসরাত জাহান কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার পরিবার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
তিনি কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সক্রিয় সংগঠক ছিলেন। গত জুলাই-আগস্টে তার নেতৃত্বেই শহরে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী রাজপথে ছিল। নূসরাত বর্তমানে সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।