পুলিশী হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল ইরান। হিজাব ঠিকমতো না পরায় সেই তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই নিয়ে শুরুতে সমালোচনা ঝড় বইতে থাকে এরইমধ্যে পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় সেই তরুণীর মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই ইরানজুড়ে চলছে তুমুল বিক্ষোভ। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি চালালে ৫ জনের মৃত্যু হয়।
বার্তা সংস্থা ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের রাজধানী তেহরান এবং ইরানের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে প্রবল বিক্ষোভ। গতকাল সোমবার তৃতীয় দিনের বিক্ষোভেও যোগ দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
কুর্দিশ এক মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে, সোমবার ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী ইরানের কুর্দিস অঞ্চলে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়, এতে অন্তত পাঁচজন নিহত হন।
জানা যায়, বিক্ষোভকারীদের অনলাইন যোগাযোগ সীমিত করতে তেহরান ও কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা অনেকটা সময় ধরে বন্ধ রাখা হয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলায় তেহরানে দাঙ্গা পুলিশ নামানো হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের মাহসা আমিনি (২২) হিজাব ঠিকমতো না পরার অভিযোগে দেশটির নীতি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর গত শুক্রবার আমিনির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়।
এ নিয়ে মাহসা আমিনির পরিবারের অভিযোগ,পুলিশের নির্যাতনে মারা গেছে আমিনি। তবে অভিযোগ নিয়ে ভিন্ন মত দিচ্ছে দেশটির পুলিশ।
হেঙ্গাও মানবাধিকার সংস্থা টুইটারে বলেছে, পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হওয়া আমিনির নিজ শহর কুর্দিসের সাকেজে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছুঁড়েছে। এতে অন্তত দুই জন নিহত হয়েছে।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, দিভানদারেহ শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সরাসরি গুলিতে আরও দুইজন নিহত হয়েছে। এছাড়া কুর্দিস্তানের দেহগলান অঞ্চলে আরও একজন নিহত হয়েছে।
নিহতের ঘটনা নিয়ে এখন পর্যন্ত ইরানের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে নিশ্চিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
এদিকে, ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএন বলেছে, কিছু শহরে সামান্য বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।
রাষ্ট্রীয় টিভি বলেছে, কিছু সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এছাড়া সামাজিক মাধ্যমে দাবি করা নিহত বিক্ষোভকারীদের তথ্য প্রত্যাখ্যান করেছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। কিছু নারী বিক্ষোভকারী নিজেদের চুল কেটে ভিডিও বার্তা প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে। অনেকে আবার তাদের হিজাব পুড়িয়ে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
হিজাব পুলিশের হাতে মাহসা আমিনিকে হত্যার প্রতিবাদে ইরানের নারীরা তাদের চুল কেটে ও হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বলে এক টুইটে এক ভিডিও বার্তায় এমনটাই দাবি করেছে ইরানের এক সাংবাদিক এবং অ্যাক্টিভিস্ট মাসিহ আলিনজাদ।