বিডিআর হত্যাকাণ্ড ছিল বিদ্রোহ নয়, বরং একটি ষড়যন্ত্র যার উদ্দেশ্য ছিল দেশের সেনাবাহিনী ও জাতীয় সুরক্ষা প্রতিষ্ঠানে আঘাত করা। এ মন্তব্য করেছেন জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের সেনাবাহিনী ও বিডিআরকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়েছিল, যা একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল।
৬ জানুয়ারি সোমবার রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ১৫ বছর আগে, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারিতে পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে ঘটে ঐতিহাসিক এই হত্যাকাণ্ড। সে সময় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন এবং আরও ৫৫ জন গুরুতর আহত হয়ে বেঁচে ফেরেন। এই হত্যাকাণ্ডের সময় চরম নির্যাতনের শিকার হন অনেকেই। যারা বেঁচে ফিরেছেন, তারা এখনো সেই ভয়াবহ স্মৃতি ও দগদগে ক্ষতের কথাগুলো শেয়ার করেন।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে গঠিত হয় ৭ সদস্যের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন, যা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের কাজ শুরু করে। কমিশনটির সদস্যরা শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন, যেখানে উঠে আসে হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতার বর্ণনা এবং সঠিক বিচার না হওয়ায় শহীদ পরিবারের সদস্যদের হতাশা ও দুঃখ। তারা দাবি করেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ড দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত হেনেছিল এবং তারা চায়, একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচিত হোক এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করা হোক।
কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান বলেন, কমিশন নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে এবং তিন মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। তিনি আরও জানান, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্তে প্রয়োজন হলে, শেখ হাসিনাকে ভারতের মাটিতে ডেকে আনা হবে, অথবা কমিশনের একটি দল ভারত গিয়ে তার সাক্ষাৎকার নেবে।
এছাড়া, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ভারতের কোনো সম্পর্ক ছিল কি না, সে বিষয়ে প্রমাণ প্রমাণ সংগ্রহের জন্য কমিশন সভাপতির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়।