দেশের প্রথম নারী বিদ্যাপিঠ হিসাবে পরিচিত কুমারখালী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, যেটি কুমারখালী সরকারি পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামেও পরিচিত। কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী পৌরসভায় অবস্থিত বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৮৬৩ সালে এবং এটি অবিভক্ত বাংলার তৃতীয় এবং বাংলাদেশের প্রথম বালিকা বিদ্যালয়। তবে বিদ্যালয়টির আলোচনা এখন ঐতিহ্যে নয় এক ভিন্ন কারণে। বিদ্যালয়ের বাথরুম চুরির অভিযোগ ওঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ অনুযায়ী, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক সন্তোষ কুমার মোদক বিদ্যালয়ের বাথরুম গোপনে বিক্রি করে দিয়েছেন।
জানা যায়, সাম্প্রতিক বিদ্যালয়ের একটি পুরাতন ভবন বিক্রির জন্য টেন্ডার হয়। সেই ভবন বিক্রি কমিটির আহবায়ক ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ার্দার, সদস্য সচিব ছিলেন কুমারখালী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার মোদক ও সদস্য ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজমুল হক।
তবে টেন্ডারের পরবর্তী সেটি একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পেয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি পুরাতন ভবন ভাঙ্গা শুরু করলে প্রতিষ্ঠানের পাশে বড় একটি বাথরুমও গোপনে বিক্রি করে ফেলেন বিদ্যালয়টির এই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
টেন্ডারের কোথাও বাথরুমসহ ভবন বিক্রির বিষয় উল্লেখ না থাকলেও প্রধান শিক্ষক বাথরুম বিক্রির করে নিজের পকেটে ঢুকিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছে বিক্রির টেন্ডারের নথি চাইলে কমিটির আহবায়ক ফোন করে বলে দিয়েও তিনি দেখাননি এই প্রতিবেদককে। লুকিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ।
এ ইস্যুতে সাংবাদিকদের আনাগোনার খবর শুনে পুরাতন ভবনের ভাঙ্গা ৮০০ পিচ ইট রেখে দিয়ে বাথরুমের ইট বলে চালিয়ে দেবার চেষ্টাও চালাচ্ছেন ওই প্রধান শিক্ষক।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার মোদক জানান, বাথরুমটি পুরাতন ছিল তাই তাদের দিয়ে দিয়েছি। ভাংতে অনেক খরচ হতো এতে প্রতিষ্ঠান উপকৃত হয়েছে।
তবে এটি আইন মেনে হয়েছে কি না? ম্যানেজিং কমিটি জানে কিনা? টেন্ডারে ছিল কি না এমন প্রশ্নের কোন কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি। রেজুলেশনও করা নেই বলে জানান তিনি।
ঘটনার বিষয়ে কমিটির আহবায়কের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধুমাত্র পুরাতন একটি ভবন বিক্রির কথা ছিল। বাথরুম বিক্রির কোন বিষয় উল্লেখ ছিল না। আমি শুধু ভবন বিক্রির বিষয়টা জানি।
এ বিষয়ে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুমারখালী সরকারি পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি এস এম মিকাইল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমারও জানা নেই আপনাদের মাধ্যমেই জানছি। তবে তিনি যদি বাথরুমও বিক্রি করে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেটি নিয়ম বহির্ভূত কাজ করেছেন প্রধান শিক্ষক। আমি দ্রুতই তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিব।