প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আসন্ন রমজান ও গ্রীষ্মে এবং চলমান কৃষি সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলমান কৃষি সেচ মৌসুম, আসন রমজান ও গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বর্ধিত চাহিদা মেটানো, শিল্প খাতে উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখা এবং রপ্তানিমুখী বিভিন্ন কলকারখানার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎপাদিত ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখতে স্পট মার্কেট থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি করে বর্ধিত চাহিদা পূরণ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এ কারণে সরকার অন্যান্য ভোক্তা শ্রেণীকে অপরিবর্তিত রেখে শুধু বিদ্যুৎ, শিল্প, ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ও বাণিজ্যিক খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব খাতে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে ইতোমধ্যে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে। ২০০৮ সালে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট। ২০১৮ সালে উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। আর বর্তমানে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা ২ হাজার ৩শ মিলিয়ন ঘনফুট।
সংসদে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের অভূতপূর্ব সাফল্য বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও কৃষি পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে সরকার সার ব্যবস্থাপনা সংস্কার, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রণোদনা প্রদান ও সারসহ কৃষি উপকরণে উন্নয়ন সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি জানান, দেশে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে উন্নয়ন সহায়তায় কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। কৃষকদের সহায়তা করতে স্বল্প সুদে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা, সাশ্রয়ী মূল্যে সার, উন্নত জাতের বীজ ও সেচের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফলে জলবায়ু পরিবর্তন এবং করোনা মহামারির আঘাত ও বৈশ্বিক সংকট সত্ত্বেও কৃষির উন্নতি ও আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তনের কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
এ সময় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার সম্ভাবনা সম্পর্কিত বৈশ্বিক পর্যবেক্ষণ বিষয়ে সরকার সতর্ক দৃষ্টি রাখছে এবং সম্ভাব্য মন্দার প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে। রাজস্ব নীতি ও মুদ্রানীতির মধ্যে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, উৎপাদনশীল ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় সম্পদ প্রবাহ অব্যাহত রাখতে সরকার অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। আয়বর্ধক উৎপাদনশীল খাতে সম্পদ প্রবাহ অব্যাহত থাকলে এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় প্রান্তিক জনগণের ক্রয় ক্ষমতা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হলে অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব অনেকাংশে প্রশমন ও এড়িয়ে চলা সম্ভব।