নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার স্বার্থে ভোটের সময় সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, ‘আমার মতে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের একটাই চ্যালেঞ্জ তা হলো, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন করা।
সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। অন্যদিকে আগামী জাতীয় নির্বাচন বিশ্বমানের হতে হবে। বিশ্বমানের নির্বাচন করতে হলে একটি নিরপেক্ষ সরকার দরকার। গ্রহণযোগ্য সরকারই কেবল গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারে।
আজ রবিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁও ইসি কার্যালয়ে সভায় তিনি এ কথা বলেন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা করেন প্রধান কমিশনার।
মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় জাতীয় নির্বাচনের প্রতিটি আসনে অধিষ্ঠিত সংসদ সদস্যকে পদে বহাল রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের ধারণা বাতুলতা মাত্র। নির্বাচনের আগে সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ না করলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, ওই সভায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছেন অধিকাংশ সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও সচিব। আর সেনাবাহিনী মোতায়েন না করা এবং নির্বাচনের সময় সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ করার পক্ষেও জোরালো মত প্রদান করা হয়।
সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) একার পক্ষে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে সব দল যদি না আসে, তাহলে এটা গ্রহণযোগ্য হবে না। সুতরাং কীভাবে আনবেন, তা আপনারা কী অফার করবেন, তার ওপর নির্ভর করবে। আমার সময়ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ওয়াজ প্রবলেমেটিক (সমস্যা ছিল)। তাদের আনতে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে। এখন তারা যেসব কথাবার্তা বলছে, তাতে তো মনে হয়, তারা নির্বাচনে যেতে রাজি নয়।’
আবার নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন না করার পক্ষে মত দেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, সবার মতামত আমলে নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজনের চেষ্টা করছে বর্তমান কমিশন।